বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টির প্রতিনিধি সভায় দলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়েছে। সারা দেশ থেকে আগত ১৫০ জন কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে সম্প্রতি রমনা চাইনিজ হোটেলে অনুষ্ঠিত এই সভায় ডক্টর নাজমুল করিমকে সভাপতি এবং মো. নাজমুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ২০২৫-২০২৯ মেয়াদের জন্য নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।
সকাল ১০টায় এই প্রতিনিধি সভা শুরু হয়ে স্থায়ী হয় প্রায় ছয় ঘণ্টা। দেশের ৬৪টি জেলা থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সভায় যোগ দেন, যা দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কণ্ঠভোট পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়।
নতুন কমিটির মূল নেতৃত্ব ও পদবির মধ্যে সভাপতি হিসেবে ডক্টর নাজমুল করিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. নাজমুল আলমের নাম প্রকাশ করা হয়। পরে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত বাকি প্রেসিডিয়াম সদস্যদের নির্বাচন সম্পন্ন হয়।
নতুন কমিটির অগ্রাধিকার ও লক্ষ্য: ১. সাংগঠনিক সংস্কার: জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলোকে পুনর্গঠন এবং যুব ও নারী শাখাকে শক্তিশালী করা। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সদস্য তালিকা আধুনিকীকরণ। ২. নীতি ও আদর্শ: ‘সুশাসন, স্বচ্ছতা ও সমতা’Ñ এই তিন স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে নতুন ইশতেহার প্রণয়ন। বেসরকারি খাতের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়িয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি। ৩. রাজনৈতিক কর্মসূচি: আগামী তিন মাসে পাঁচটি বিভাগীয় সম্মেলন আয়োজন। সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করে গণবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে গণআন্দোলনের প্রস্তুতি।
কেন্দ্রীয় কমিটির নতুন সভাপতি ডক্টর নাজমুল করিম বলেন, ‘এই কমিটি দেশের সংকট মোকাবিলায় একটি বিকল্প রাজনৈতিক ধারা গড়ে তুলবে।’ সাধারণ সম্পাদক মো. নাজমুল আলম বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো দলকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া।’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই পরিবর্তন দলটিকে একটি প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে।
সাবেক নেতাদের একাংশ নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাস্তবসম্মত ও সঠিক বলে অভিহিত করে। অনেকে তরুণ নেতৃত্বের অংশগ্রহণে দলের জন্য শঙ্কা কেটেছে বলে মত প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, আগস্ট মাসে নতুন কমিটির প্রথম জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। খুবই দ্রুত একটি সংবাদ সম্মেলন করে দলের রোডম্যাপ প্রকাশ করা হবে।
এই ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি একটি গতিশীল পুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা জাতীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।