ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫

ডিএনসিসি প্রশাসক উত্তরাকে ‘গ্রিন বেল্ট’ অঞ্চলে পরিণত করা হবে

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২৫, ০২:০২ এএম

রাজধানীর উত্তরাকে ‘গ্রিন বেল্ট’ অঞ্চলে পরিণত করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। এ জন্য পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। গতকাল বুধবার উত্তরায় লেকপাড়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে প্রশাসক এসব কথা বলেন। ঢাকার পরিবেশ রক্ষা ও বায়ুদূষণ হ্রাসে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) চলতি বর্ষা মৌসুমে ৫ লাখ গাছ রোপণের একটি বৃহৎ বনায়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। নগরবাসীর জন্য বাসযোগ্য ও সবুজ ঢাকা গড়ে তুলতে তিন মাসব্যাপী এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিএনসিসি জানায়, এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল উত্তরা তৃতীয় পর্যায়ের ১৫ নম্বর সেক্টরের দিয়াবাড়ি ৫ নম্বর ব্রিজসংলগ্ন ৪ নম্বর লেকপাড়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের অর্থায়ন এবং পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন সেভারসের সহযোগিতায় আজ ৫০০টি দেশীয় প্রজাতির চারা রোপণ করা হয়।

ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘শুধু সরকারি উদ্যোগ যথেষ্ট নয়, কমিউনিটির সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা নাগরিকদের সম্পৃক্ত করছি, যাতে একটি কমিউনিটি ওনারশিপ তৈরি হয়। এই লক্ষ্য নিয়েই আজকের এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ঢাকার পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা, বায়ুদূষণ হ্রাস এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে এই বর্ষায় ৫ লাখ গাছ রোপণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সড়ক বিভাজক, পার্ক, খেলার মাঠ, খালপাড়, কবরস্থান ও নি¤œ আয়ের মানুষের বসবাসকারী এলাকায় এসব গাছ রোপণ করা হবে।

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার ভেতরে একসময় পাঁচটি নদী প্রবাহিত হতো। এর মধ্যে কনাই নদীর একটি শাখা ছিল খিদির খাল। বর্তমানে খিদির খালকে টঙ্গী খালের সঙ্গে যুক্ত করে পুনরায় প্রবাহিত করা হয়েছে। এ ধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা শহরের প্রাকৃতিক জলাধার ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি।’
মোহাম্মদ এজাজ আরও বলেন মানুষ বলে, শহরে গাছ লাগানোর জায়গা নেই। অথচ আমরা যদি ঢাকার বিভিন্ন ওয়াটার বডির (জলাশয়, খাল, নদী) পাশেই পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগাই, তাহলে খাল ও নদীর দুই পাশ মিলে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বৃক্ষরোপণ করা সম্ভব। এতে বায়োডাইভারসিটি রক্ষা পাবে এবং শহর হবে জলবায়ু সহনশীল বা ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট।

‘অনুষ্ঠানে আইডিএলসি’র লার্নিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও সিএসআর বিভাগের প্রধান ফারহানা শারমিন, গ্রিন সেভারসের প্রধান নির্বাহী আহসান রনি এবং ডিএনসিসি, আইডিএলসি ও গ্রিন সেভারসের অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ আইডিএলসি এবং গ্রিন সেভারসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী পরিবেশ উদ্যোগে অংশীদার হওয়ার জন্য। রোপিত চারাগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ হিজল, বট, কদম, কৃষ্ণচূড়া, ডুমুর, ছাতিম, জাম, জামরুল, নিম ও অর্জুন, যা নদী ও খালপাড়ে রোপণের জন্য উপযোগী। গাছগুলোর পরবর্তী পরিচর্যার দায়িত্ব পালন করবে গ্রিন সেভারস। নগরবাসীর সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে একটি টেকসই মডেল হয়ে উঠবে বলে ডিএনসিসি আশা করে।