নতুন মৌসুমে স্প্যানিশ লা লিগায় জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা। তবে তিন বছর পর লা লিগায় ফেরা লেভান্তের মাঠে তাদের জন্য জয় পাওয়া সহজ ছিল না। ম্যাচ জুড়ে বলের নিয়ন্ত্রণ ও আক্রমণে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে বার্সা। কিন্তু খেলার ধারার বিপরীতে প্রথমার্ধে দুই গোল করে চমক দেখায় লেভান্তে। বিরতির পর কোচ হান্সি ফ্লিকের দল ঘুরে দাঁড়াল দারুণভাবে। শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলে জিতে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে কাতালানরা। লিগ শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে প্রথম দুই ম্যাচের দুটিই জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বার্সা। লেভান্তে হারল প্রথম দুই ম্যাচেই।
ইভান রোমেরো ও হোসে লুইস মোরালেসের গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে তিন মিনিটের মধ্যে পেদ্রি ও ফেররান তরেসের গোলে সমতায় ফেরে বার্সেলোনা। ৯০ মিনিটের পর যোগ করা সময়ে লেভান্তের ডিফেন্ডার উনাই এলগেসাবালের আত্মঘাতী গোল গড়ে দেয় ব্যবধান। পুরো ম্যাচে প্রায় ৮৩ শতাংশ সময় পজেশন ধরে রেখে গোলের জন্য ২৬টি শট নিয়ে ১০টি লক্ষ্যে রাখতে পারে বার্সেলোনা। লেভান্তের ৮টি শটের ৫টি লক্ষ্যে ছিল। আক্রমণাত্মক ফুটবলে শুরু থেকে লেভান্তেকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। বেশির ভাগ সময় খেলা হতে থাকে লেভান্তের অর্ধেই। তবে সুযোগ পেলে মাঝেমধ্যেই পাল্টা আক্রমণ শাণানোর চেষ্টা করে স্বাগতিকেরা।
তেমনই এক পাল্টা আক্রমণে পঞ্চদশ মিনিটে গোলও পেয়ে যায় তারা। বাঁম দিক থেকে সতীর্থের উঁচু করে বাড়ানো বলে বক্সে প্রথম স্পর্শে জেরেমি খুঁজে নেন ইভান রোমেরোকে। বার্সেলোনার এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে আরেকজনের বাধা এড়িয়ে কাছ থেকে বল জালে পাঠান স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। বার্সেলোনার বেশ কিছু আক্রমণ লেভান্তের রক্ষণে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলার পর ২৭তম মিনিটে ভালো একটি সুযোগ পান তরেস। তবে বক্সে আলেহান্দ্রো বালেদর পাসে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডের শট অনায়াসে ঠেকান গোলরক্ষক। এই ম্যাচেও যথারীতি ‘হাই লাইন’ রক্ষণের কৌশল নেয় বার্সেলোনা। তাতে মাঝেমধ্যেই বিপদের শঙ্কায় পড়তে হয় তাদের। ৩৭তম মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ হারান তরেস। পেদ্রির পাস বক্সে ফাঁকায় পান তিনি, কিন্তু তার শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে।
তিন মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে লামিনে ইয়ামালের শট ঠেকাতে সমস্যা হয়নি গোলরক্ষকের। ৪২তম মিনিটে অল্পের জন্য আরেকটি গোল হজম করেনি বার্সেলোনা। ফ্রি-কিকে এলগেসাবালের ডাইভিং হেড পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায়। প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে রাফিনিয়ার হেড পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সফল স্পট কিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ৩৮ বছর বয়সি মোরালেস। তার শট বক্সে বালেদর হাতে লাগার পর ভিএআর মনিটরে রিপ্লে দেখে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। যদিও বার্সেলোনা ডিফেন্ডারের হাত ছিল শরীরের কাছেই। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ২ গোল করে ম্যাচে ফেরে বার্সেলোনা। ৪৯তম মিনিটে ইয়ামালের পাস বক্সের বাইরে পেয়ে ২৫ গজ দূর থেকে বুলেট গতির শটে বল জালে পাঠান পেদ্রি। ৫২তম মিনিটে রাফিনিয়ার কর্নারে কাছ থেকে দারুণ ভলিতে পরের গোলটি করেন তরেস। ৫৭তম মিনিটে আরেকটি সুযোগ পায় বার্সেলোনা। এরিক গার্সিয়ার হেড ঠেকান গোলরক্ষক।
৭০তম মিনিটে তরেসের হেডও প্রতিহত করেন তিনি। দুই মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে দানি ওলমোর নিচু শটও আটকে দেন গোলরক্ষক। শেষ দিকে বদলি হিসেবে নামেন রবের্ত লেভানদোভস্কি, জুল কুন্দেরা। একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে বার্সেলোনা। কিন্তু আরেকটি গোলের দেখা মিলছিল না। অবশেষে যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে বক্সে দারুণ ক্রস বাড়ান ইয়ামাল, হেডে ক্লিয়ার করার চেষ্টায় নিজেদের জালেই বল পাঠান এলগেসাবাল। জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা।