লিগের প্রথম তিন ম্যাচে জয়হীন থাকার পর আগের ম্যাচে বাংলাদেশ পুলিশ এফসিকে ২-০ গোলে হারায় ঢাকা আবাহনী। কিন্তু প্রথম জয় তুলে নেওয়ার পর সেই ধারা অব্যাহত রাখতে পারেনি আকাশি-নীলরা। এবার তারা পয়েন্ট হারিয়েছে ফর্টিস এফসির কাছে। বাংলাদেশ ফুটবল লিগের (বিএফএল) খেলায় আজ শনিবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় আবাহনীকে মোকাবিলা করে ফর্টিস। পঞ্চম রাউন্ডের এই ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। ম্যাচে একাধিক আক্রমণ করেও কোনো দল পায়নি গোলের দেখা। অবশ্য দুই দিকের গোলপোস্টের নিচে একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় যেন মগ্ন ছিলেন আবাহনীর গোলকিপার মিতুল মারমা ও ফর্টিসের গোলকিপার সুজন পেরেইরা।
সর্বশেষ মৌসুমে সেরা লিগের সেরা গোলকিপার হয়েছিলেন মিতুল মারমা। চলতি মৌসুমে অবশ্য ৫ ম্যাচে ৫ গোল হজম করেছে তার দল আবাহনী। এদিকে ফর্টিসের সুজন পেরেইরা ৫ ম্যাচে মাত্র দুটি গোল হজম করেছেন। ম্যাচ যত গড়াবে গোলকিপিংয়ে দুজনের দ্বৈরথটা হয়ত আরও দেখার মতো হবে।
এদিন শেখ মোরছালিনকে ছাড়া মাঠে নামে আবাহনী। ফর্টিসও পায়নি তাদের সেরা অস্ত্র ওমর বাবুকে। তবে আক্রমণের কমতি ছিল না দুই দলের থেকে। যদিও গোলের সুযোগ বেশি তৈরি করেছিল ফর্টিসই। কখনো নিজেদের ভুলে সুযোগকে গোলে রূপান্তর করা যায়নি, আবার কখনো সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন প্রতিপক্ষের গোলকিপার। নবম মিনিটে গোলের সুযোগ আসে ফর্টিসের সামনে। সাজেদ হোসেনের নেওয়া কর্নার কিক ফিস্ট করে ফিরিয়ে দেন আবাহনীর গোলকিপার মিতুল। ফিরতি বলে দলকে হতাশ করেন ফরহাদ। ৩১ মিনিটে বক্সের সামনে থেকে ফর্টিসের ওকাফরের জোড়ালো শট যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। তিন মিনিট পর বা দিক থেকে উড়ে আসা বল অন টার্গেটে রাখতে পারেননি মিরাজুল। বিরতির পর আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে ফর্টিস। ৪৮ মিনিটে অবশ্য একটা ভালো সুযোগ তৈরি করে দলটি। এ সময় ছোট কর্নার থেকে সাগরের ক্রসে গোলে হেড নেন ওকাফর। বল জালে প্রবেশের আগে কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করেন মিতুল। ৫৮ মিনিটে জোড়া পরিবর্তন আনেন আবাহনী কোচ মারুফুল হক। আল আমিনের সঙ্গে মাঠে নামান মোহাম্মদ ইবরাহীমকে। উঠিয়ে নেওয়া হয় এনামুল গাজী ও মিরাজুলকে। খানিক পর ওকাফরের দারুণ আক্রমণ, কিন্তু গোলে শট নিতে একটু বেশিই দেরি করে ফেলেন, পরে বল হারান পাপন সিংয়ের কাছে। ৬৫ মিনিটে ভালো সুযোগ মিস করেন ফর্টিসের সাজেদ জুম্মান নিঝুম। ওকাফরের কাছ থেকে বল পান বক্সের একদম সামনে। কিন্তু নিঝুম মেরে বসেন আকাশে। ৭৬ মিনিটে পিয়াস নোভার বদলি হিসেবে শাখাওয়াত রনিকে মাঠে নামান ফর্টিস কোচ। ৮১ মিনিটে ওকাফরকে আবারও গোলবঞ্চিত করেন মিতুল। বা প্রান্ত দিয়ে নিজে বক্সে ঢুকে বল বাড়িয়ে দেন সাজেদ নিঝুমকে। তাঁর ক্রসে গোলমুখের সামনে রনি হেড নিলে ফিরতি বলে ওকাফরের দারুণ শট ফিস্ট করে ফিরিয়ে দেন আবাহনী গোলকিপার। ৮৬ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সেরা সুযোগটি পায় আবাহনী।
প্রতি আক্রমণে বল নিয়ে উপরে ওঠেন দিয়াবাতে। বক্সে ঢুকে ডান পায়ের আড়াআড়ি নিচু শট নেন মালির এই ফরোয়ার্ড। তবে ফর্টিসের নেপালি গোলকিপার সুজান পেরেইরা ডান দিকে ঝাপিয়ে ঠেকান। ইনজুরি সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ওকাফরের শট কাঁপায় বাইরের জাল। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র মেনে মাঠ ছাড়ে দুই দল। দিনের অপর খেলায় গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে ফকিরেরপুল ইয়াংমেন্স ক্লাবের সঙ্গে পিছিয়ে পড়ে ১-১ গোলে ড্র করে বাংলাদেশ পুলিশ এফসি। আর মুন্সীগঞ্জের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আরামবাগকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি। কুমিল্লার ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মোহামেডান ৪-০ গোলে হারিয়েছে পিডব্লিউডি স্পোর্টস ক্লাবকে। পঞ্চম রাউন্ড শেষেও পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে বসুন্ধরা কিংস। তাদের পয়েন্ট ১৩। দারুণ জয়ে ৭ পয়েন্ট পেয়ে তালিকার চারে জায়গা পেয়েছে মোহামেডান। দুইয়ে থাকা রহমতগঞ্জের পয়েন্ট ১০। ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে ফর্টিস।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন