ঢাকা শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

গার্মেন্টস থেকে পরিত্যক্ত কাপড় কিনে কপাল খুলেছে মেহেরপুরের যুবকের

রাব্বি আহমেদ, মেহেরপুর
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৪, ১১:২৯ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গার্মেন্টস থেকে কাপড়ের পরিত্যক্ত টুকরা বা ঝুট কিনে এনে তোলা উৎপাদন করে কপাল খুলেছে মেহেরপুরের নাজমুল খান নামের এক যুবকের। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে আরও ৩ জনের। সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতা পেলে বড় আকারে কারখানা খোলার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে বেশিদূর লেখাপড়া করা হয়নি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রামনগর গ্রামের নাজমুল খানের। ফরিদপুর রাজবাড়ি জেলাতে তুলা কারখানায় চাকরি করা অবস্থায় স্বপ্ন দেখতেন, নিজেও একদিন হবেন কারখানার মালিক।১৬-১৭ বছর চাকরি করে নিজ এলাকায় তৈরি করেন ঝুট থেকে তুলা তৈরীর কারখানা । এলাকায় এসে ৫ লাখ টাকা দিয়ে মেশিন ক্রয় করে, ঢাকা থেকে গার্মেন্টস এর ঝুট কিনে এনে কয়েকজন কর্মচারী নিয়ে শুরু করেন তুলা তৈরির কাজ। প্রথম কয়েক মাস লাভের আশা না দেখলেও পরবর্তীতে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেন তিনি। তার উৎপাদিত কারখানা থেকে মাসে ১২ হাজার কেজি তুলা উৎপাদিত হয়। যার বাজার মূল্য আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ টাকা। বাৎসরিক সকল খরচ বাদ দিয়ে আর লাভ থাকে সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। তার কারখানার উৎপাদিত তুলা জেলা চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলাতেও বাইরের বেশ কয়েকটি জেলায়। তুলা থেকে তৈরি হচ্ছে লেপ,তোষক, বালিশ সহ তুলা জাতীয় অন্যান্য ব্যবহারের জিনিসপত্র। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা এসে প্রায় প্রতিনিয়তই তুলা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতা পেলে কারখানাটি আরো অনেক বড় করা সম্ভব বলে জানান এই উদ্যোক্তা।

উদ্যোক্তা নাজমুল খান দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, অন্যের কারখানায় চাকরি করে ঠিক মত সংসার চলতো না, বাড়িতে এসে সামান্য কিছু জমি জায়গা ছিল সেগুলো বিক্রি করে ৫ লাখ  টাকা সংগ্রহ করে। এসে ৫ লাখ টাকা দিয়ে মেশিন ক্রয় করে, ঢাকা থেকে গার্মেন্টস এর ঝুট কিনে এনে কয়েকজন কর্মচারী নিয়ে শুরু করেন তুলা তৈরির কাজ। প্রথম কয়েক মাস লাভের আশা না দেখলেও পরবর্তীতে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেন তিনি। তার উৎপাদিত কারখানা থেকে মাসে ১২ হাজার কেজি তুলা উৎপাদিত হয়। যার বাজার মূল্য আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ টাকা। বাৎসরিক সকল খরচ বাদ দিয়ে আর লাভ থাকে সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা।জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা এসে প্রায় প্রতিনিয়তই তুলা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতা পেলে কারখানাটি আরো অনেক বড় করা সম্ভব বলে জানান এই উদ্যোক্তা।

নাজমুল খানের কারখানায় কর্মচারী সোহেল রানা দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে  জানান, নিজ এলাকায় কারখানায় চাকরি করতে পেরে পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক ভালো আছি। এ কারখানার মাধ্যমে অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

কর্মচারী রহিমা খাতুন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, এর আগে অন্যের ক্ষেত খামারের কাজ করে ঠিকমতো পারিশ্রমিক পেতাম না। একদিন কাজ হলে দুদিন বসে থাকা লাগতো। এখানে চাকরি করে সন্তানকে প্রবাসে পাঠিয়েছি। পরিবারে অফিসের স্বচ্ছলতা।

স্থানীয় যুবক সবুজ খান দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে  জানান, স্বল্প পুঁজিতে পরিত্যক্ত গার্মেন্টসের ঝুট থেকে তুলা উৎপাদন করে নাজমুস ভাই অনেক স্বাবলম্বী হয়েছে। সরকারি চাকরি পেছনে না ছুটে ভাইয়ের মত ইচ্ছা আছে একটি তুলা কারখানা দেওয়ার।

আর এক যুবক আশিকুর রহমান দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান,নাজমুল এক সময় অন্যের কারখানায় চাকরি করতো, সেসময় তার ঠিকমতো সংসার চলতো না। আজ সে নিজে স্বাবলম্বী হয়েছে। কার কারখানায় একজন চাকরি করে স্বাবলম্বী হয়েছে। চাকরি বা প্রবাসে না গিয়ে এলাকায় এমন কারখানা এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান সুযোগ ও নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। নাজমুল ভাইয়ের দেখা দেখে আমারও ইচ্ছা প্রকাশ করেছে এমন একটি কারখানা তৈরি করার।

মেহেরপুর বিসিকের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফয়সাল হাসনাত দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, তার যদি বিসিকের নিবন্ধন থাকে, তারা যদি সরকারি নিয়ম-কানুন মেনে ব্যবসা পরিচালনা করে। তাহলে আমরা সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ও সহযোগিতা প্রদান করব।