ঢাকা বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বিদ্যুতের আলোয় ড্রাগন চাষ, মন কাড়ছে পথচারীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৫, ১২:৩২ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চারদিকে ঘোর অন্ধকার। মাঝে মাঝে শোনা যাচ্ছে শিয়ালের হাক অথচ রাস্তার পাশে সেই ফাঁকা মাঠের মাঝখানে চোখে পড়ে আলোর ঝলকানি। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার এক চাকরিজীবী সফলভাবে গড়ে তুলেছেন ড্রাগন বাগান। সেই বাগানেই রাতের বেলায় আলোর ঝলমলে দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন পথচারীরা।

মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদ। এই কপোতাক্ষ নদটি যশোরের কেশবপুর উপজেলার  সাগরদাড়ীর গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাতক্ষীরা তালার মধ্য দিয়ে মাগুরা ইসলামকাটি  হয়ে খুলনা পাইকগাছা নদীর সঙ্গে মিশে তার খরস্রোতে অববাহিকায়  প্রবাহিত হচছে । অন্যদিকে এই কপোতাক্ষ নদের পাশ ঘেষে জেলার পাটকেলঘাটা টু মাগুরা রাস্তা বয়ে গেছে। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করছে।

সন্ধ্যা নামতেই চারদিকে অন্ধকার থাকলেও রাস্তার পাশে এই বাগানে বিদ্যুৎ এর রঙিন ঝলকানি আলোয় রাতের ড্রাগন বাগানটি আলোকিত হয়ে ওঠে। তখনই ওই ড্রাগন বাগানের পাশ ঘেষে রাস্তার পথচারীরা সহ বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষ এই সৌন্দর্য উপভোগ করে থাকেন।

এ দিকে সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বাগমারা গ্রামের মৃত শিক্ষক ওমর আলী শেখের ছেলে অধ্যাপক  এস এম তহিদুজ্জামান শখ করে ড্রাগন ফলের চাষ করেছেন। অন্যজনের থেকে প্রায় ৭ বিঘা জমি হারি নিয়ে গত ৭/৮ বছর পূর্বে এই ড্রাগন বাগানের চাষ শুরু করেন। চাকরির পাশাপাশি এই ড্রাগন ফলের চাষ করে তিনি সফল হয়েছেন।

পেশাগতভাবে তিনি একজন সরকারি বি সি এস ক্যাডার। তিনি খুলনা একটি সরকারি কলেজের অধ্যাপক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বর্তমানে যশোর শিক্ষা  বোর্ডের  কলেজ পরিদর্শক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি বলেন, শখ করে ড্রাগন ফলের বাগান করে সফল হয়েছি। ড্রাগন ফলের বাগানে শীতের সময় ঝলকানো আলো সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শীতের সময় দিন ছোট আর রাত বড় সময়ে দিনে তাপমাত্রা অনেক কম থাকে আবার রাতে পড়ে ঠান্ডা। যে কারণে ড্রাগন  তার ফুল ও ফল দিতে পারে না। এজন্য প্রতি রাতে অন্তত পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা দিনের আলোর মত জমি আলোকিত করতে হয়। এতে ড্রাগন ফলের কুড়ি দ্রুত গাছে চলে আসে। ফল আলোর উজ্জ্বলতায় আস্তে আস্তে মোটা হয়।

এস এম তহিদুজ্জামান জানান, আমার বাগান দেখে এলাকায় অনেকে এই ড্রাগন চাষ করছে। এসব দেখে খুব আনন্দ পাই,আমি চাই এলাকায় বেকারত্ব দূর হোক। তবে বাহিরে থাকার কারণে ঠিকমত সময় দিতে পারি না। লোকজন আছে তারা দেখাশুনা করে। তবে এটা খুব লাভজনক একটা ভালো চাষ।

ড্রাগন বাগানের কর্মচারী কামাল হোসেন জানান, প্রায় ৭/৮ বছর এখানে কাজ করি। তবে যখন থেকে এই বাগানে বিদ্যৎ এর রঙিন বাল্ব  জালানো হয়েছে তখন থেকে বাগানের সৌন্দর্য দেখতে সাধারণ মানুষ ভিড় জমান।

তালা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা বেগম জানান, তালায় উনার দেখাদেখি অনেকে এখন ড্রাগন চাষ করছে। এটা লাভজনক একটা চাষ। উপজেলা থেকে সব সময় পরামর্শ দিয়ে থাকি চাষিদের। আমরা চাই এলাকার বেকার যুবকেরা ড্রাগন সহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করে বেকারত্ব মুক্ত দেশ গড়ে স্বাবলম্বী হোক।