বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৫, ০৪:১৩ পিএম

রমজানেও জনপ্রিয়তার শীর্ষে জাকিরের টক-মিষ্টি জিলাপি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৫, ০৪:১৩ পিএম

রমজানেও জনপ্রিয়তার শীর্ষে জাকিরের টক-মিষ্টি জিলাপি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পবিত্র রমজান মাসে ময়মনসিংহবাসীর কাছে ইফতার হিসাবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ঐতিহ্যবাহী টক-মিষ্টি জিলাপি। যতই দিন যাচ্ছে, ততই মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই জিলাপি। প্রতিদিন প্রায় লাখ টাকার টক-মিষ্টি জিলাপি বিক্রি হয়।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বেলা দুইটার দিকে নগরীর জিলা স্কুল মোড়ের জাকির হোসেনের ‍‍`মেহেরবান‍‍` হোটেলে গিয়ে দেখা যায়, টক মিষ্টি জিলাপি কিনতে মানুষের ভীড় জমেছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে টক-মিষ্টি স্বাদের জিলাপির স্বাদ নিতে অনেকে এসেছেন। জেলার বাইরে থেকে কোনো কাজে এসেছিলেন, এমন অনেক ব্যক্তিও জিলাপি কিনে নিচ্ছেন।

জাকির হোসেন জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার বালিয়ান ইউনিয়নের তেলিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট জাকিরের স্কুলের বারান্দায় হাঁটার সৌভাগ্য হয়নি। অভাবের তাড়নায় ১৯৭৩ সালে শহরে এসে মইনুল হোসেনের চায়ের দোকানে কাজ নেন।

স্থানীয়রা জানান, সময়ের ব্যবধানে শহরজুড়ে বহু জিলাপির দোকান গড়ে উঠেছে। রমজান এলে বিভিন্ন জমকালো রেস্তোরাঁসহ অলিগলিতে ইফতারসামগ্রী বিক্রি করা হয়। অনেকে মনের মাধুরি মিশিয়ে তৈরি করেন টক-মিষ্টি জিলাপি। কিন্তু, সেটি জাকির হোসেনের তৈরি টক-মিষ্টি জিলাপির সঙ্গে টেক্কা দিতে পারে না। ফলে এখনো দেদারসে বিক্রি হচ্ছে ঐতিহ্যের এই জিলাপি।

জিলাস্কুল মোড় থেকে জিলাপি কিনতে আসা মাহফুজ বলেন, ২০ থেকে ২৫ বছর যাবত এই জিলাপি কিনে খাচ্ছি। অন্য সব জিলাপি থেকে এ জিলাপির স্বাদ আলাদা। জিলাপি চিবোতে শুরু করলেই পাওয়া যায় মচমচে, রসালো, টক-মিষ্টি একটা স্বাদ। যা খুবই ভালো লাগে। ফলে রমজান এলে এই দোকান থেকে জিলাপি নিয়ে যাই। পরিবারের সবাই একসঙ্গে ইফতারে মজা করে খাওয়া হয়।

বাপ্পী মজুমদার জেলার গৌরীপুর উপজেলা থেকে শহরের কাচিঝুলি এলাকায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। তিনিও জিলাপি কিনছিলেন। বাপ্পী বলেন, বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলাম। বাপ-দাদারাও বলে জেলার মধ্যে এই জিলাপি বিখ্যাত। এর আগে কয়েকবার এই দোকানে বসে জিলাপি খেয়েছি। অন্য জিলাপির চেয়ে স্বাদে ভিন্নতা রয়েছে।  

জাকির হোসেনের ছেলে আশিকুর রহমান বলেন, রমজান এলে জিলাপি বিক্রির ধুম পড়ে। বিশেষ করে ঐতিহ্যবাহী স্পেশাল টক মিষ্টি জিলাপি এক-চেটিয়া বিক্রি হয়। ক্রেতাদের চাপ সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। দোকানে ১৫ জন কর্মচারী কাজ করছেন। দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থেকে জিলাপি কিনে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

বছরের অন্যান্য সময় প্রতিদিন প্রায় দুই মণ বিক্রি হলেও শুধু রমজান মাসে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ মণের বেশি জিলাপি বিক্রি হয়। এরমধ্যে প্রায় সবাই কেনেন ঘিয়ে ভাজা স্পেশাল টক-মিষ্টি জিলাপি। এই জিলাপির প্রতি কেজির মূল্য ৩৬০ টাকা। রোজার প্রথমদিন প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার টাকার জিলাপি বিক্রি হয়েছে। পুরো রমজানে ২০ লক্ষ টাকার জিলাপি বিক্রি হবে বলে আশা করছি।

চালের গুড়া, মাষকলাই ও ময়দা গুলিয়ে পেষ্ট তৈরি করা হয়। কড়াইয়ের গরম তেলে ভেঁজে জিলাপির আকৃতি দেয় কারিগর। ভেঁজে জিলাপিগুলো গাঢ় বাদামি রং করে ভেজে নেয়া হয়। অপর একটি পাত্রে চিনি, পানি, দারুচিনি ও এলাচ দিয়ে সিরা তৈরি করা হয়। জিলাপি ভেজে সঙ্গে সঙ্গেই গরম সিরায় ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর বেশ খানিকক্ষণ জিলাপি সিরার মধ্যেই রেখে দেয়া হয় যাতে জিলাপিগুলোর ভেতরে সিরা প্রবেশ করে। এভাবেই তৈরি হয় টক জিলাপি। 

জাকির হোসেন বলেন, টক-মিষ্টি জিলাপির প্রধান উপকরণ হলো মাসকলাই ডাল, ময়দা, চালের গুঁড়ার সঙ্গে তেঁতুল। প্রতিবারই জিলাপি ভাজতে নতুন তেল ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন দুপুর থেকেই গরম কড়াই থেকে ভাজা জিলাপি টেবিলের ডালায় সাজানো হয় থরে থরে। ইফতারের আগে নিমিষেই খালি হয়ে যায় জিলাপির ডালা।

তিনি বলেন, আজানের আগ পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড়ের কারণে অনেকে সিরিয়াল না পেয়ে জিলাপি কিনতে পারেন না। তারা আশপাশের বিভিন্ন দোকান থেকে কিনে বাড়ি ফেরেন। সুশৃঙ্খলভাবে বিক্রি করতে আমাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। স্বাদ ধরে রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

আরবি/এস

Link copied!