উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তে নিহত শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল বলেছেন, ‘রাষ্ট্র যদি মনে করে, তবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রই নেবে। পরিবার হিসেবে তাদের এমন কোনো দাবি নেই।’
শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুরে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ী গ্রামে স্ত্রীর কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
মনসুর হেলাল বলেন, ‘মাহেরীন তার কাজের মধ্য দিয়েই বেঁচে থাকবেন। জীবদ্দশায় যদি এমন কিছু ঘটত, হয়তো তিনি নিজেই কিছু বলতেন। এখন আর বলার কিছু নেই। আমরা পারিবারিকভাবে কোনো দাবি করছি না। রাষ্ট্র যদি মনে করে, সে যে দায়িত্ব পালন করেছে, তাতে সম্মান জানানোর প্রয়োজন আছে- তা রাষ্ট্রের বিবেচনার বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দুই সন্তানের জীবন কেবল শুরু হয়েছিল। ওদের ‘মা’ ছিল সবচেয়ে বড় শক্তি। এখন সেই মানুষটি আর নেই। আপনারা দোয়া করবেন, যেন ওরা তাদের মায়ের রেখে যাওয়া সম্মান রক্ষা করতে পারে, যেন এমন কিছু না করে যাতে সে সম্মান ক্ষুণ্ন হয়।’
নিহত অন্যদের স্মরণ করে মনসুর হেলাল বলেন, ‘যারা মাহেরীনের সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছে, সেই নিষ্পাপ শিশুগুলোর জন্য আমাদের পক্ষ থেকে গভীর দোয়া রইল। আল্লাহ যেন সবাইকে জান্নাত নসিব করেন।’
এর আাগে গত ২১ জুলাই উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্লাস চলাকালে পাশের একটি ভবনে একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। মুহূর্তেই আগুন ধরে যায় ভবনে। আতঙ্ক, ধোঁয়া আর চিৎকারের মধ্যেও শিশু শিক্ষার্থীদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে ব্যস্ত ছিলেন শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরী।
এ সময় তিনি নিজেই আগুনে আটকে পড়েন। শরীরের বেশিরভাগ অংশ দগ্ধ অবস্থায় তাকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এদিকে গত ২৪ জুলাই প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে, বিমান দুর্ঘটনায় নিহত দুই শিক্ষককে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সম্মাননা প্রদানের বিস্তারিত প্রক্রিয়া খুব শিগগির নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
আপনার মতামত লিখুন :