ঢাকা মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫

মিয়ানমারে তুমুল সংঘর্ষ-গোলাগুলি, ৩০০ আরাকান আর্মির অনুপ্রবেশের আশঙ্কা

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার
প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৫, ১২:৫১ পিএম
নাফনদী ও বিজিবি সদস্য। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ফের তুমুল সংঘর্ষ ও গোলাগুলির কারণে প্রাণ বাঁচাতে সশস্ত্র আরাকান আর্মির সদস্যরা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে একজন আরাকান আর্মি সদস্য অস্ত্রসহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। তার দাবি, আরও প্রায় ৩০০ জন সদস্য যেকোনো সময় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে পারে।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (১০ আগস্ট) সকালে কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী সীমান্তে এক সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী আত্মসমর্পণ করে। তার নাম জীবন তঞ্চঙ্গা (২১)। তিনি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার গর্জবুনিয়া গ্রামের চিংমং তঞ্চঙ্গ্যার ছেলে বলে দাবি করেছেন।

বিজিবির উখিয়া ৬৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ‘পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী সীমান্তে আত্মসমর্পণকারী জীবন তঞ্চঙ্গার কাছে ছিল একটি বিদেশি একে-৪৭ রাইফেল, ৫২ রাউন্ড গুলি ও দুটি ম্যাগাজিন। সে জানায়, মংডুর একটি ক্যাম্প থেকে নিরাপত্তা সংকটে পালিয়ে এসেছে।’

জীবনের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘মিয়ানমারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে আরও প্রায় ৩০০ জন আরাকান আর্মি সদস্য পালিয়ে এসেছে এবং তারা যেকোনো সময় বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে পারে।’

অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করল আরাকান আর্মির সদস্য। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

এদিকে সীমান্ত এলাকার সচেতন মহল আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, হঠাৎ করে বিপুলসংখ্যক সশস্ত্র অনুপ্রবেশ ঘটলে দেশের সীমান্ত ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকায় সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে কয়েক মাস ধরেই সংঘর্ষ চলছে। এর প্রভাব বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি ও উখিয়া এলাকায়ও পড়ছে, যেখানে প্রায়ই গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

জীবন তঞ্চঙ্গার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিজিবি জানায়, তিনি সবাইকে চিনেন না, তাই অন্যদের নাগরিকত্ব বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তিনি জানান, ক্যাম্পে টিকে থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না।

আত্মসমর্পণকারী ওই ব্যক্তিকে আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে উখিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে বিজিবি সূত্রে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।