ঢাকা শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫

গরমে কদর বেড়েছে তাল শাঁসের

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২৫, ০১:০৪ পিএম
তাল শাঁস বিক্রি করছেন মৌসুমী ব্যবসায়ী। ছবি- সংগৃহীত

সারা দেশের মতো বগুড়ার দুপচাঁচিয়াতেও তাপপ্রবাহ বইছে। টানা তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিনরাতের এই খরতাপ থেকে একটু স্বস্তি পেতে তালের শাঁস কিনে খাচ্ছেন সব বয়সি মানুষ।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দুপচাঁচিয়া পৌর এলাকার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে, সিও অফিস বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন, জেকে কলেজ গেট, সরকারি হাইস্কুল মাঠে, স্বর্ণকার পট্টি, পুরাতন কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে তালের শাঁস বিক্রি করছেন আকরাম হোসেন, আব্দুর রহিম, বাবু,মোজাম, সুজন, মজনু মিয়াসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী। তারা প্রতি পিস তাল শাঁস বিক্রি করছেন গড়ে ১৫-২৫ টাকা।

উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, দুপচাঁচিয়ায় তালগাছের সঠিক সংখ্যা কত তাদের জানা নেই। তবে ৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার মধ্যে বাজার দিঘী, চৌমুহনী, আলতাফ নগর, গুনাহার ইউনিয়নে তাল গাছ তুলনামূলক বেশি।

চামরুল ইউনিয়নের পাঁচথিটার গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, আগের দিনে পাকা তাল দিয়ে তালরুটি, বিভিন্ন পিঠা বানানো হতো, এখন আর সে দৃশ্য দেখা যায় না। তার পরিবর্তে তালের শাঁস মৌসুমি ফল হিসেবে খেতে হচ্ছে । কিছু দিন পর তাও আর খেতে পারব না। কারণ যেভাবে সড়ক বিভাগের রাস্তার দুপাশে সারি সারি তালগাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের দেখার কেউ নেই।

ক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, তালের শাঁস খেতে অনেক ভালো লাগে। গরমের মাঝে এটি খেলে শরীর ঠান্ডা হয়।

কাহালু উপজেলার জোগাড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা তাল বিক্রেতা মোজাম আলম বলেন, প্রতি মৌসুমে দুপচাঁচিয়া পুরাতন বাজারের সামনে তাল বিক্রি করি। দীর্ঘ ২০-২২ বছর ধরে তালের ব্যবসা করছি।

দুপচাঁচিয়া উপজেলার কৃষি কর্মকতা কৃষিবিদ সাজেদুল আলম বলেন, তালের শাঁস সুস্বাদু ও পুষ্টিকর, তালে রসও উপকারী। তালের রস দিয়ে গুড়, মিছরি তৈরি হয়।

দিন দিন তালগাছ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষ তালগাছের গুরুত্ব না বুঝে গাছ কেটে ফেলে। যেহেতু তালগাছে বছরে একবার ফল দেয় এবং লাভও কম, সে কারণে কেটে ফল বা কাঠের গাছ রোপণ করছে। তালের বীজ থেকে চারা হতে সময় লাগে প্রায় ১ বছরের মতো, তাই কোনো নার্সারি তালের চারা করতে চায় না।

কৃষি কর্মকর্তা বলেন, তালগাছ উঁচু হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ (বজ্রপাত) থেকে মানুষের জীবন রক্ষা করে। এ ছাড়া ভূমিক্ষয়, ভূমিধস, ভূগর্ভস্থ পানির মজুত বৃদ্ধি ও মাটির উর্বরতা রক্ষা করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখে।