ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫

মেঘনার পাড় ঘেঁষে ড্রেজারে বালু উত্তোলন, হুমকিতে সেচ প্রকেল্পর বাঁধ

চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম
মেঘনা নদীর পাড় ঘেঁষে অবৈধভাবে আবারও ড্রেজার দিয়ে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর পাড় ঘেঁষে অবৈধভাবে আবারও ড্রেজার দিয়ে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। এতে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে মেঘনা-ধনাগোদা বন্যা নিয়ন্ত্রণ সেচ প্রকল্পের ৬৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ।

গত কয়েক মাস প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন হলেও দেখা যায়নি প্রশাসনকি কোনো ব্যবস্থা।

গত কয়েকদিন উপজেলার মেঘনা নদী উপকূলীয় দশানি, ষাটনল, নাছিরা কান্দি, বোরচর এলাকায় প্রকাশ্যে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলতে দেখা যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বালু সন্ত্রাসী কিবরিয়া মিয়াজি ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন। তার এই ধরনের কাজে জড়িতদের মধ্যে বিরোধে একাধিক ব্যক্তিও গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় এখনো মামলা চলমান।

স্থানীয় দশানি গ্রামের মাজেদুর রহমান বলেন, ‘দিন-রাত মেশিন বসিয়ে বালু তোলে। নদীর পাড় ধসে আমাদের ফসলি জমি ও বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বেড়িবাঁধ যদি ভেঙে যায়, তাহলে পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে যাবে। অথচ কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রশাসনকে বারবার জানালেও কোনো ফল পাইনি। মনে হয় বালু সিন্ডিকেটের কাছে প্রশাসন জিম্মি।’

‘মাটি ও মানুষ’ নামে মতলবের পরিবেশবাদী সংগঠনের পরিচালক শামীম খান বলেন, ‘বালু উত্তোলন বন্ধে সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন অবৈধভাবে ড্রেজার চলছে। এটি কেবল নদীভাঙন বাড়াচ্ছে না। বরং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্যও মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

উপজেলার মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘মূলত বালু উত্তোলনের জন্য মুন্সিগঞ্জ এলাকায় প্রশাসন অনুমোদন দিয়েছে। সেখানে তারা বালু উত্তোলন করে। নৌ পুলিশ অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে তৎপর রয়েছে।’

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, ‘মতলব উত্তরের সীমানায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত নদীতে অভিযান করছি।’


 
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন এই বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। ঘটনাস্থলে নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা অচিরেই যৌথ বাহিনীর একটি অভিযান পরিচালনা করব।’

ডিসি আরও বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কেউ পার পাবে না। এতে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে লাখো মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’