ঢাকা শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫

লালমাইয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতার গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২৫, ১২:০৩ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে একইসঙ্গে একটি রেস্টুরেন্ট ও মার্কেটেও হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।

মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে উপজেলার ভুশ্চি বাজারে অবস্থিত আবদুল করিম মজুমদার মার্কেটে এ ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনার পরদিন বুধবার দুপুরে ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবদল নেতা মো. জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০–১২ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন- লালমাই উপজেলার পরতী গ্রামের মৃত মন্তাজ উদ্দিনের ছেলে মো. ফরহাদ উদ্দিন (৪৭), জামুয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে জাকির হোসেন (৪০), মাওলানা আব্দুল লতিফের ছেলে কাজী জাফর আহম্মদ রাজন (৩৭), মৃত আলী আশ্রাফ মিয়ার ছেলে কামাল হোসেন (৪৫), আমুয়া গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে আবু হানিফ (৩৩), আব্দুল বারিকের ছেলে ডা. জুবায়ের (২৭), সুলতান আহম্মদের ছেলে জয়নাল কাজী (৩৭), রহমতপুর চেঙ্গাহাটা গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে আবুল হাশেমসহ (৫২) অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ের অংশ হিসেবে বাগমারা উত্তর-দক্ষিণ ও পেরুল উত্তর-দক্ষিণ ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া নাঙ্গলকোটে ফেরার পথে ভুশ্চি বাজারে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে স্থানীয় করিম মজুমদার মার্কেটের মেজবান হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে কয়েকজন নেতাকর্মীসহ নাস্তা করছিলেন তিনি।

এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরীর অনুসারী কয়েকজন নেতাকর্মী মোবাশ্বের আলমের একটি বক্তব্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ‘কুমিল্লা নিয়ে কটূক্তি কেন করা হলো’ জানতে চান। বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে ১৫–২০ জন রেস্টুরেন্টে হামলা চালান। তারা মোবাশ্বের আলমের ব্যক্তিগত গাড়ির গ্লাস ভেঙে দেন এবং হোটেল ও মার্কেটেও ভাঙচুর চালান।

মোবাশ্বের আলমের অনুসারীরা অভিযোগ করেছেন, লালমাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফরহাদ উদ্দিনের নেতৃত্বেই হামলা হয়েছে। ফরহাদ বিএনপি নেতা মনিরুল হক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। উল্লেখ্য, মনিরুল হক ২০১৮ সালে ওই আসনে বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করেন এবং এবারও মনোনয়নপ্রত্যাশী।

তবে ফরহাদ উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি পাশের মসজিদে নামাজ পড়ে বের হতেই হট্টগোল শুনি। বৃষ্টি ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মধ্যেই কিছু যুবক ভাঙচুর চালায়। আমি দু’পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেছি, হামলার সঙ্গে জড়িত নই। রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।’

মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘নিজ দলের লোকজন কেন আমার গাড়ি ও হোটেলে হামলা চালাল, জানি না। স্থানীয় নেতাকর্মীরা আমাকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছেন।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনায় যারাই জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

লালমাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাসুদ করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটিতে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার উল্লাহ, জাহাঙ্গীর হোসাইন সর্দার ও আবদুল খালেক। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, ‘মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে, তবে এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’