যশোর সদর উপজেলার নোঙরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় এ বছর আলু সংরক্ষণ করে বড় ধরনের লোকসানে পড়েছেন কৃষকরা। প্রতি কেজি আলু সংরক্ষণে খরচ হয়েছে প্রায় ২৪ টাকা, অথচ এখন হিমাগারে সেই আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৫.৫ থেকে ১৬ টাকা কেজি দরে। ফলে প্রতি কেজিতে কৃষকদের লোকসান হচ্ছে গড়ে ৮ থেকে ১০ টাকা।
নোঙরপুর গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া জানান, ‘তিনি ৭ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে হিমাগারে ১০০ বস্তা সংরক্ষণ করেন। সংরক্ষণের খরচ বাবদ প্রতি বস্তায় ৪০০ টাকা খরচ হলেও এখন বিক্রিতে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত লোকসান হচ্ছে।’
যশোর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার ১১টি হিমাগারে এ বছর ৪০ হাজার ৪৯৬ টন খাওয়ার আলু ও ৩ হাজার ৭৫০ টন বীজ আলু সংরক্ষিত হয়েছে। তবে গত পাঁচ মাসে হিমাগার থেকে বের হয়েছে মাত্র ১০ হাজার ২৩২ টন খাবার আলু। বর্তমানে অবশিষ্ট রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টন।
বাঘারপাড়া উপজেলার সরদার রোকেয়া কোল্ডস্টোরেজে সংরক্ষিত ৬ হাজার ৫৩১ টনের মধ্যে এ পর্যন্ত বের হয়েছে মাত্র ৫৪৫ টন। হিমাগারের একজন সুপারভাইজর জানান, বর্তমানে কেজিতে ৯–১০ টাকা লোকসান হচ্ছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের যশোর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা কিশোর কুমার সাহা বলেন, ‘প্রতি কেজিতে ৫–৭ টাকা পর্যন্ত কৃষকদের ক্ষতি হচ্ছে। তবে আগামী এক মাসে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। কারণ দেশে সবজি উৎপাদন কমেছে এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ কয়েকটি দেশে আলু রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে কৃষকদের আশঙ্কা, এভাবে লোকসান চলতে থাকলে আগামী মৌসুমে অনেকেই আলু চাষে আগ্রহ হারাবেন। এতে ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এই জেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদনের সময় কৃষকেরা ভালো দাম পেলেও সংরক্ষিত আলুতে এখন তারা বড় লোকসানে রয়েছেন।’
আপনার মতামত লিখুন :