ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক সড়কের প্রায় পুরোটাই এখন খানাখন্দে ভরা। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব গর্তে পানি জমে থাকে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, যানবাহনের ওভারলোড ও দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে চলাচলকারীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। খানাখন্দে ভরা এই সড়কে চলাচল করা এখন যেন একপ্রকার যুদ্ধের সমান।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঝিনাইদহের তথ্যমতে, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক সড়কে ঝিনাইদহ অংশের (আর-৭৪৫) দৈর্ঘ্য ২০.৯৭ কিলোমিটার। বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে সড়কটি বিভিন্ন সময়ে সংস্কার করা হয়েছে। যেটি আগে করা হয়েছে সেটি অনেকটা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত ট্রাকের মাধ্যমে মেরামতের কাজ চলমান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়, নগরবাথান বাজার থেকে আঠারো মাইল, ও আমেরচারা থেকে বৈডাঙ্গা পর্যন্ত সড়কটির কার্পেটিং উঠে গিয়ে অসংখ্য খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। ডাকবাংলা বাজার থেকে দশমাইল পর্যন্ত সড়কে বেশকিছু জায়গায় তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত।
ঝিনাইদহ থেকে চুয়াডাঙ্গাগামী বাসের যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, সপ্তাহে দুই দিন চুয়াডাঙ্গায় যেতে হয়। গত এক বছরে ঝিনাইদহ থেকে চুয়াডাঙ্গা রাস্তার যে দশা হয়েছে তা বলার মতো নয়।
ইজিবাইক চালক লিয়াকত হোসেন বলেন, রাস্তা খানাখন্দে ভরে গেছে। যাত্রী নিয়ে গাড়ি চালাতে অনেক কষ্ট হয়। ভয়ে থাকি, গর্তে চাকা পড়ে কখন যেন গাড়ি উল্টে যায়।
ডাকবাংলা বাজারের ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, প্রতিদিন ব্যবসার কাজে মোটরসাইকেলে করে ঝিনাইদহ শহরে যেতে হয়। এক বছর ধরে এই সড়কের যে অবস্থা তাতে একবার গেলে আর ফিরে আসার অবস্থা থাকে না। সারা গায়ে ব্যথা হয়ে যায়। সারা রাস্তায় গর্ত তৈরি হয়েছে। আতঙ্কে থাকতে হয় কখন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। তিনি দ্রুত এই সড়কের সংস্কার দাবি করেন।
ট্রাকচালক আফতাব উদ্দিন বলেন, ট্রাকে মালামাল বোঝাই করে এই সড়কে চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে রাতে চলাচল করা খুবই কঠিন।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কে বিভিন্ন স্থানে যেসব ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে তা আমরা নিয়মিত মেরামত করছি।
তিনি আরও জানান, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে আমের চারা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কের জন্য ইতোমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বাকি অংশ দ্রুত সময়ের মধ্যে টেন্ডার করা হবে। জহুরুল লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্ক অর্ডার প্রদান করা হয়েছে।
তবে, বর্ষাকালে সড়কে বিটুমিনের কাজে মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা ছিল। যেহেতু বর্ষাকাল শেষ হয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করবে বলে জানান তিনি।