ঢাকা বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫

‘আমি পুলিশ, মারলেও আমার বিচার নাই’

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ১১:০৩ পিএম
হামলার শিকার মোফাজ্জল ও অভিযুক্ত হামলাকারী পুলিশের এএসআই আরিফুল ইসলাম

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পুলিশের এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে নিজের চাচাতো ভাইকে নৃশংসভাবে কামড়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে। গত রবিবার রাত ১১টার দিকে পৌর এলাকার ঘাগড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত মোফাজ্জল হোসেন বর্তমানে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয় সূত্র ও পরিবারের সদস্যরা জানায়, সৌদি আরবে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ভুক্তভোগী মোফাজ্জল। রাতের সেই হামলায় তাকে বেধড়ক মারধরের পাশাপাশি তার প্রবাসযাত্রার জন্য রাখা ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগও করে স্বজনরা।

অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম পাকুন্দিয়ার মুক্তিযোদ্ধা ফয়েজ উদ্দিনের বড় ছেলে ও শরীয়তপুর জেলা পুলিশের এএসআই হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

গ্রামবাসীর দাবি, চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই আরিফুল ও তার ভাই শরীফুল এলাকায় প্রভাব বিস্তার, হুমকি-ধমকি ও বিভিন্ন ধরনের অপতৎপরতায় জড়িয়ে পড়েন। আত্মীয়দের সঙ্গেও খারাপ আচরণ ও সংঘর্ষের ঘটনাও নিত্যদিনের।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মোফাজ্জল হোসেন বলেন, চাকরিতে ঢোকার পর থেকেই আরিফরা এলাকায় আধিপত্য দেখায়। আমাকে মারার সময় সে বলে- ‘আমি পুলিশ, মারলেও আমাদের বিচার নাই।’ আমি প্রশাসনের কাছে এই হামলার বিচার চাই।

এ ঘটনায় মোফাজ্জলের বড় বোন সালমা আক্তার বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, 'যে পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা দেবে, সেই পুলিশই যদি হামলা চালায়, তাহলে আমরা বিচার পাব কোথায়? আমরা ভীত-সন্ত্রস্ত। তার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ কি পদক্ষেপ নেয়, সেটিই এখন প্রশ্ন।'

অভিযুক্ত এএসআই আরিফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংক্ষেপে বলেন, 'এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসা হবে।' এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।

পাকুন্দিয়া থানার ওসি এস এম আরিফ অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, 'একজন কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

ঘটনাটি এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা দোষী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।