পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার সেঞ্চুরি টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী জিয়াউর রহমান (৫০) লাশ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ।। বুধবার সন্ধ্যায় জেলার আটঘরিয়া উপজেলার মাঝগ্রাম রেল লাইনের পাশে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
ওই দিন দুপুরে দোকানের টেবিলের ওপর একটি চিরকুট লিখে আত্মগোপন করেন তিনি। চিরকুটে লেখা ছিল-‘দোকান-সংসার চালাইতে পারলাম না, তাই দুনিয়া ত্যাগ করিলাম। কেউ দায়ী নয়।’ নিচে লেখা ছিল তার নাম ও তারিখ।
জিয়াউর রহমান ভাঙ্গুড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর সারুটিয়া ওয়াপদা এলাকার মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, জিয়াউর রহমান দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে টেইলার্সের ব্যবসা করতেন। পৌর শহরের ভাঙ্গুড়া বাজারে সেঞ্চুরি টেইলার্স নামে তার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। একসময় তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় টেইলার্স কারিগর ছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সময় তিনি টেইলার্সের কাজের পাশাপাশি শার্ট ও প্যান্টের কাপড়ের ব্যবসা করতেন। একপর্যায়ে তার টেইলার্সের দোকানে অন্তত ১৫ জন কর্মচারী কাজ করতেন। ক্রেতাদের কাছে তিনি একজন স্মার্ট ও রুচি সম্পন্ন টেইলার্স কারিগর হিসেবে পরিচিত পান। তবে গত পাঁচ বছর ধরে কাজে অমনোযোগী হয়ে পড়েন। এতে ধীরে ধীরে তার ক্রেতা কমতে থাকে। ছাঁটাই করতে থাকেন কর্মচারীদের। ফলে অভাব জেঁকে বসে তার জীবনে। বাড়িসহ বিভিন্ন সম্পদ বিক্রি করেও অভাব থেকে মুক্ত হতে পারেননি তিনি।
এদিকে, সম্প্রতি তিনি অভাবে পড়ে মানসিকভাবে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। দোকানে থাকা অবস্থায় কর্মচারীদের সঙ্গে প্রায়ই দুর্ব্যবহার করতেন। এমনকি পরিবারের সদস্যের সঙ্গেও তিনি ঠিকমতো কথাবার্তা বলতেন না। অবশেষে বুধবার দুপুরে দোকানে চিরকুট লিখে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে তার ছেলে চিরকুট পেয়ে বাবাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে থানায় জিডি করেন। কিন্তু এদিন সন্ধ্যায় রেল লাইনের ধারে পাওয়া যায় তার লাশ।
জিয়াউরের চাচাতো ভাই জাকির হোসেন জানান, কয়েক মাস ধরে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
রেলওয়ে সিরাজগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল উদ্দিন বলেন, লোকটি রেল লাইনের ওপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। পেছন থেকে আসা ট্রেনে ধাক্কা লেগে মৃত্যু ঘটে।
ময়নাতদন্তের পর আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে লাশ তার পরিবারকে হস্তান্তর করা হবে।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন