ইরাকে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছেন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের প্রবাসী আজাদ খান (৪৭) । তিন টুকরো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় স্বজনদের আহাজারিতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে লিটন নামে আরেক প্রবাসী ফোনে পরিবারকে জানান, আজাদকে হত্যা করে তিন টুকরো করে বস্তায় ভরে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। দুর্গন্ধে স্থানীয় পরিচ্ছন্নকর্মীরা মরদেহ পেয়ে পুলিশে হস্তান্তর করেন।
আজাদ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হোসেন মণ্ডলপাড়ার ইয়াজ উদ্দিনের ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিহত আজাদ স্থানীয় ইয়াজ উদ্দিনের ছেলে। মাত্র তিন মাস আগে বাবুল নামে এক দালালের মাধ্যমে ধারদেনা করে ইরাক যান তিনি। কিন্তু সেখানে গিয়ে প্রতিশ্রুত কাজ না পেয়ে অন্যত্র পাঠানো হয়।
নিহতের মা বুক চাপড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন, ‘ছেলের মরদেহ ফেরত চাই। আমার বুকের ধনকে আইনা দেন। ওরে ছাড়া আমি কি করে বাঁচবো?’
আজাদের স্ত্রী ময়না বেগম জানান, দালাল বাবুলের মাধ্যমে স্বামীকে দোকানে কাজের কথা বলে পাঠানো হলেও পরে দোকান মালিক কফিল তাকে নিজের বাসায় নিয়ে গৃহকর্মে নিয়োজিত করেন। কয়েকদিন ধরে স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় পরিবারের দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে।
আজাদের স্ত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। বাবুল যদি তার ফোন ধরতো, হয়তো আমার স্বামীর এমন পরিণতি হতো না। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
আজাদের শ্যালক জহরুল হক বাপ্পি জানান, মরদেহ বর্তমানে বাগদাদের মর্গে রাখা আছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে। আগামী রোববার অভিযুক্ত কফিলকে কাজুমিয়া আদালতে তোলা হবে। পরিবার দ্রুত মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চায়।
একদিকে দালালের প্রতারণা, অন্যদিকে প্রবাসে অসহায় জীবনের করুণ চিত্র—আজাদের মৃত্যু আবারও বিদেশগামী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।