ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর, ২০২৫

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিতেই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে: আকন্দ

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৫, ১১:০০ পিএম
বক্তব্য দেন জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারি মাসেই হতে হবে। তবে সেটা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির মধ্য দিয়েই পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে। সকল ভোটারের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে পিআর পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই।’

তিনি আরও বলেন, এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে মনোনয়ন বাণিজ্য, রাজনীতিতে পেশীশক্তির ব্যবহার, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন এবং কালো টাকার প্রভাব অনেকটাই কমে যাবে। এ ছাড়া এ পদ্ধতিতে প্রত্যেক ভোটারের ভোটের প্রতিফলন সংসদে সঠিকভাবে ঘটে।’

বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেল ৩ টায় রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামীর জেলা মহানগরীর উদ্যোগে ‘আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) নির্বাচন ব্যবস্থা: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে বিভিন্ন স্তরের জনগণ, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীরা অংশ নেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক ডা. নাজিব ওয়াদুদ।

গণভোট সম্পর্কে মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘জুলাই সনদের গণভোট নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করতে হবে। যারা বলে পিআর বুঝি না, তাদের বলব— আপনাদের নেতারাই তো সেই দেশে আছেন যেখানে পিআর পদ্ধতি চালু রয়েছে, সেখান থেকে জেনে নিন। আমাদের পাঁচ দফা আন্দোলনের অন্যতম দাবি হলো পিআর। একসময় যারা পিআরের বিরোধিতা করছে, তারাই একদিন কেয়ারটেকার সরকারের মতো পিআরের জন্য আন্দোলন করবে।’

সভায় উপস্থিত বক্তারা বলেন, ‘জাতীয়ভাবে যদি কোনো দল ২০-২৫ শতাংশ ভোট পায়, কিন্তু সাংগঠনিক দুর্বলতা, বিত্তবৈভবের অভাব বা একক আসনে জেতার সক্ষমতা না থাকায় একটি আসনও না পায়, তাহলে সেটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অস্বাভাবিক। পিআর পদ্ধতিতে এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হতে পারে। এখানে প্রতিটি দলের প্রাপ্ত ভোটের হার অনুসারে সংসদে আসন বরাদ্দ হয়। ফলে ছোট দল, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, এমনকি নতুন রাজনৈতিক দলও সংসদে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পায়।’

আলোচনায় উঠে আসে, বর্তমানে প্রচলিত ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট পদ্ধতির নির্বাচনে যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পান, তিনিই জয়ী হন। যদি কোনো নির্বাচনী এলাকায় কোনো প্রার্থী ৩৫ শতাংশ ভোট পান এবং বাকি ৬৫ শতাংশ ভোট অন্যদের মধ্যে বিভক্ত থাকে, তবু তিনিই নির্বাচিত হন। এর মানে হচ্ছে— ৬৫ শতাংশ ভোটারের মতামত মূল্যায়িত হয় না। ফলে বিজয়ী দলের বা প্রার্থীর কাছে এই বিপুল সংখ্যক ভোটারের কোনো গুরুত্ব থাকে না।

রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. শাহাদৎ হোসাইন ও অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুলের যৌথ সঞ্চালনায় সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরী আমির ড. মাওলানা কেরামত আলী।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর সেক্রেটারি মু. ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাড. আবু মো. সেলিম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম, রাজশাহী সদর-২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন সরকার এবং রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।