বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কমাতে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে বাংলাদেশ। ওয়াশিংটন ডিসিতে চলমান তৃতীয় দফা বৈঠকের প্রথম দিন শেষে এমনটি জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
তিনি জানান, এজেন্ডা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে এবং বাংলাদেশের ওপর আরোপিত শুল্ক কমানো হবে বলে আমরা দেশটির বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ধারণা পেয়েছি।
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের শুল্ক যথেষ্ট কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে নির্দিষ্ট হার এখনই বলা যাচ্ছে না। আজ এবং আগামীকাল আমাদের আরও বৈঠক আছে। বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু হবে বলে আশাবাদী।’
ওয়াশিংটন ডিসির স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এই আলোচনা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন সহকারী ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ব্রেন্ডন লিঞ্চ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে যাওয়া বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা রয়েছে। আগে এই শুল্কহার ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ, যা ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতিতে বেড়ে দাঁড়ায় ২২ থেকে ২৩ শতাংশে।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করলেও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি মাত্র ৬ বিলিয়ন ডলার। তুলনামূলকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভিয়েতনামের বাণিজ্য ঘাটতি ১২৩ বিলিয়ন ডলার হলেও, সে দেশ ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্কে সমঝোতা করেছে। তাই বাংলাদেশের প্রত্যাশা, শুল্ক হার ভিয়েতনামের চেয়েও কম হবে।
এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ এরই মধ্যে বেশকিছু আমদানি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানির কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনা, প্রতি বছর সাত লাখ টন করে পাঁচ বছর মেয়াদে গম আমদানি এবং সয়াবিন, এলএনজি, তুলা, সামরিক সরঞ্জামসহ আরও পণ্য আমদানি বাড়ানোর পরিকল্পনা।
তিন দিনের এ আলোচনার শেষ দিন আগামীকাল বৃহস্পতিবার। আলোচনার ভিত্তিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি চুক্তির আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভিয়েতনাম ২০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন ১৯ শতাংশ, জাপান ১৫ শতাংশ, যুক্তরাজ্য ১০ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ১৫ শতাংশ শুল্ক হারে সমঝোতা করতে পেরেছে।