সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৫, ০২:২১ পিএম

স্ত্রী-সন্তান হত্যা: জামিনে বেরিয়ে আবারও বিয়ের প্রস্তুতি

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৫, ০২:২১ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পারিবারিক কলহের জেরে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় প্রায় দুই বছর আগে গরুর দুধে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে স্ত্রী মাহমুদা ও সন্তান সানজাকে হত্যা করেন এস এম সেলিম (৩৬)। হত্যার দায় নিজ মুখে স্বীকারও করেন আসামি। কিন্তু গত ২৮ জানুয়ারি ৬ মাসের জামিন নিয়ে আবারও বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আসামি সেলিম। আগের ঘরে সেলিমের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে।

জামিনে মুক্ত হয়ে বিয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা নিজেই স্বীকার করেছেন সেলিম। সেলিমের জামিনে মুক্ত হওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাহামুদার পরিবারের সদস্যরা। মাহামুদার মা জুঁই বেগম বলেন, এভাবে খুনের আসামি যদি জামিন পেয়ে যান, বিচার না হয়, তাহলে ঘরে ঘরে খুন হবে।

তার আশঙ্কা, সেলিম দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে পারেন। সেলিমের জামিন বাতিল করে তার বিচার ও শাস্তির দাবি জানান জুঁই বেগম।

মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, পারিবারিক কলহ থেকে ২০২৩ সালের ১৩ জুন রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১৪ জুন রাত আড়াইটার মধ্যে পরিকল্পিতভাবে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনাটি ঘটে। হত্যার জন্য সেলিম গরুর দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়েছিলেন। এই দুধ পানে তার স্ত্রীর পাশাপাশি সন্তানের মৃত্যু হয়। ওইদিন রাত আড়াইটার দিকে মাহামুদার দ্বিতীয় বোন মারিয়া হককে মুঠোফোনে কল করেন সেলিম। তিনি বলেন, স্ত্রী মাহামুদা ও মেয়ে সানজা কোনো সাড়া দিচ্ছেন না। দুজনের শরীর শীতল হয়ে গেছে।

মাহামুদার এই বোন ময়মনসিংহে নিজের শ্বশুরবাড়িতে থাকায় তিনি ফোন করে বিষয়টি ঢাকায় তার মামা ও ফুফুদের জানান। তারা রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় অর্কিড জামশেদ টাওয়ারে সেলিম-মাহামুদার ফ্ল্যাটে যান। দেখেন, মাহামুদা তার বিছানায় নিথর অবস্থায় পড়ে আছেন। পাশের কক্ষের বিছানায় পড়ে আছে মেয়ে সানজা। সে সময় সেলিম জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল করে বাসায় অ্যাম্বুলেন্স আনেন। তিনি ও মাহামুদার পরিবারের সদস্যরা মা-মেয়েকে (মাহামুদা ও সানজা) নিয়ে রামপুরার ফরাজী হাসপাতালে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে মাহামুদা ও সানজাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় মাহামুদার বাবা মো. মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে সেলিমকে আসামি করে রাজধানীর বাড্ডা থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ এসে হাসপাতাল থেকে সেলিমকে আটক করে। মাহামুদার বাবা মোজাম্মেল এজাহারে অভিযোগ করেন, ১৪ বছরের বিবাহিত জীবনের মধ্যে ৩ বছর ধরে (হত্যার আগের) পারিবারিক কলহ চলছিল মাহামুদা-সেলিমের। এর জেরে মাহামুদাকে নির্যাতন করতেন সেলিম।

এই মামলায় গ্রেপ্তারের পর সেলিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি স্ত্রী-মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেন, স্ত্রী তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। সেই ক্ষোভ থেকে তিনি স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মাহমুদা গরুর দুধ পান করতেন। সেই সুযোগ তিনি নেন। ওষুধের দোকান থেকে তিনি (সেলিম) ঘুমের ট্যাবলেট কিনে এনে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে দেন। তবে শুধু স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল তাঁর। সন্তানও যে দুধ পান করবে, তা তিনি বুঝতে পারেননি।

হত্যার ঘটনার সময় মাহামুদা-সেলিম দম্পতির ছোট ছেলে সারিম মারওয়ানের বয়স ছিল ৯ মাস। ঘটনার পর থেকে ছেলেটি তার নানা-নানির সঙ্গে মুন্সীগঞ্জে থাকে। ছেলেটির বয়স এখন প্রায় আড়াই বছর।

মাহামুদার মা জুঁই বেগম বলেন, হত্যার ঘটনার পর পুলিশ ও পারিবারিক হস্তক্ষেপে সারিমের জন্য মাসে ১০ হাজার টাকা দিচ্ছেন সেলিমের পরিবার।

এদিকে হাইকোর্ট থেকে পাওয়া জামিনের আদেশের অনুলিপির তথ্য অনুযায়ী, গত ২৮ জানুয়ারি ৬ মাসের জন্য অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছে সেলিমকে। জামিনের পর তার সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এই হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বিষয়ে জানতে চাইলে সেলিম বলেন, ষড়যন্ত্র করে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়েছিল।

সেলিম বলেন, তিনি তার ছেলে সারিমের খোঁজখবর রাখছেন। তার জন্য প্রতি মাসে টাকাও পাঠাচ্ছেন।

এদিকে আবারও বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন সেলিম বলেন, তিনি বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে বিয়ে করবেন। কনে দেখা হয়েছে। আম্মুর পছন্দে বিয়ে করছি।

মাহামুদার মা জুঁই বেগম বলেন, সেলিমই আমার মেয়ে আর নাতনিকে হত্যা করেছে। আমার মেয়ে আমাকে বারবারই বলত, ‘অসুস্থ হওয়া ছাড়া কোনো দিন যদি আমি মারা গেছি শোনো, তাহলে বুঝবা, সেলিম আমাকে মেরে ফেলেছে।

আরবি/এসবি

Shera Lather
Link copied!