ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ঢাকা মহানগরীতে ৮৯টি পূজামণ্ডপকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নগরীর ২৫৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে। রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দুর্গাপূজায় গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার জানিয়েছেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকা মহানগরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। কেউ কোনো দুষ্টুমি করার সুযোগ পাবে না। দুষ্টুমি করলে সম্মিলিতভাবে তা মোকাবিলা করা হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য ও ভক্তদেরও সজাগ থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, সব সমাজেই দুষ্কৃতকারী থাকে। সেখান থেকে উৎসবকে সুরক্ষিত রাখতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের উদাহরণ টেনে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে পূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে।
ডিএমপি কমিশনার জানান, এ বছর ঢাকায় ২৫৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করতে পূজা উদযাপন পরিষদের সঙ্গে সমন্বয় করে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করে সব মণ্ডপে ২৪ ঘণ্টা পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিটি মণ্ডপে ১১ থেকে ৫০ জন পর্যন্ত পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া প্রায় ২২০০ পুলিশ সদস্য টহল ও চেকপোস্টের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিমা বিসর্জনের দিন অতিরিক্ত ২৪০০ পুলিশ মোতায়েন থাকবে। শোভাযাত্রার নিরাপত্তার জন্য পলাশীর মোড়, রায়সাহেব বাজার ও ওয়াইসঘাটে তিনটি অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার বসানো হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্য, সোয়াত, বোম্ব ডিসপোজাল টিম, ডগ স্কোয়াড ও ক্রাইম সিন টিম সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকও দায়িত্ব পালন করবেন। প্রবেশপথে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থা থাকবে। সিসি ক্যামেরায় নজরদারি করা হবে। সাইবার পেট্রোলিংও জোরদার থাকবে।
কমিশনার আয়োজকদের উদ্দেশে বলেন, ভক্তরা চলে যাওয়ার পর মণ্ডপ যেন অরক্ষিত না থাকে। এজন্য রাতে অন্তত দুইজন স্বেচ্ছাসেবক উপস্থিত থাকতে হবে। এবারই প্রথম দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের জন্য থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে থানা ও ফাঁড়ি পর্যায়ের সদস্যরা মণ্ডপ পরিদর্শন করবেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও সুসংগঠিত। তাই নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা হবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।