রাজধানীর কড়াইল বস্তির আগুন তিন দিক থেকে সীমিত করা গেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। বাকি থাকা একটি দিক নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ চলছে। সংস্থাটি বলছে, সব ঠিক থাকলে আগামী এক-দুই ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাতে আগুনের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রথমে ১৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছিল। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় ইউনিট সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় ২০টি করা হয়েছে। আগুনের শিখার তীব্রতা কমেছে এবং বেশ কয়েকটি অংশে আগুন সীমিত করা সম্ভব হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানাচ্ছে, শুরুতে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যায়। প্রথম ইউনিট পৌঁছাতে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট সময় লাগে। সরু রাস্তা, যানজট ও মানুষের ভিড়ের কারণে বড় গাড়িগুলো আগুনের কাছে পৌঁছাতে দেরি হয়। এ ছাড়া কিছু উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে আগুন নেভানোর কাজে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে পাইপ কেটে ফেলা, জোড়া খুলে দেওয়া এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা বলেন, পানির ঘাটতি নেই, তবে আগুনের কেন্দ্র পর্যন্ত পানি পৌঁছাতে সময় লাগছে। এলাকা বড় হওয়ায় বহু জায়গায় পাইপ জোড়া দিতে হচ্ছে।
পরিচালক জানান, পূর্ব ও উত্তর দিকের আগুন অনেকটাই কমে গেছে। তিন দিক থেকে আগুন সীমিত হওয়ায় এখন এক দিকের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘সবকিছু ঠিক থাকলে এক–দুই ঘণ্টার মধ্যে ভালো খবর দিতে পারব।’ তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, কিছু জায়গায় এখনও শিখা দেখা যাচ্ছে। উৎসগুলো শনাক্ত করে তা নিভলে চূড়ান্তভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় বস্তিগুলোর একটি কড়াইল। সরু পথ, ঘনবসতি, দাহ্য নির্মাণসামগ্রী এবং অনিয়ন্ত্রিত বিদ্যুৎ–গ্যাস সংযোগের কারণে এখানে আগুন লাগলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিক বড় অগ্নিকাণ্ডে বস্তির বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, প্রবেশপথ সংকীর্ণ হওয়া এবং মানুষের ভিড়ই প্রতিবারই আগুন নেভানোর সবচেয়ে বড় বাধা।
আজ বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে ঘটনাস্থলে তীব্র পানি সংকটের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আগুন ক্রমশ চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে এবং বস্তির বহু ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।



