ঢাকা শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫

অটোরিকশা ছিনতাই করতে চালককে হত্যা, গ্রেপ্তার ৫

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২৫, ০৮:৫৩ পিএম
ছবি-সংগৃহীত

রাজধানীর পল্লবীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করতে গিয়ে চালককে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা।

র‍্যাব-৪-এর অধিনায়ক এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গত ১৬ মে মিরপুর ডিওএইচএস এলাকার ৪ নম্বর গেট সংলগ্ন স্থানে একটি অজ্ঞাত লাশ পাওয়া যায়। পরে জানা যায়, নিহত ব্যক্তি আব্দুল আজিদহে বাচ্চু। তিনি পেশায় অটোরিকশাচালক।

ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করলে র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তে উঠে আসে হত্যাকাণ্ডটি ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের অংশ।

র‍্যাব জানায়, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। মুসা, সৌরভ ও ইয়াছিন- তিন বন্ধু ছোটখাটো চুরি ও ছিনতাইয়ে জড়িত ছিল। তারা একটি অটোরিকশা ছিনতাইয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের পরিকল্পনা করে। তাদের ধারণা ছিল, ঢাকায় এমন কাজ করা অপেক্ষাকৃত সহজ।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৫ মে সন্ধ্যায় সৌরভ ও ইয়াছিন আগারগাঁওয়ে মিলিত হয় এবং রাত তিনটার দিকে শ্যামলীর ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে থেকে চালক আব্দুল বাচ্চুর অটোরিকশা ভাড়া নেয়। ৬০ ফিট পানির ট্যাংকির সামনে পৌঁছানোর পর তারা চালককে অটোরিকশা ঘোরাতে বলে। ঘোরাতে গেলে পেছন থেকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করে।

তারা বেশ কয়েকটি স্থানে লাশ ফেলতে ব্যর্থ হয়ে শেষমেশ মিরপুর ডিওএইচএস-এর ৪ নম্বর অবকাশ ক্যান্টিনের পাশে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

পরদিন তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গিয়ে চোরাই গাড়ি ব্যবসায়ী চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আল আমিন নামের একজন চক্রনেতার সহায়তায় অটোরিকশাটি শাহজালাল ও দুলালের মাধ্যমে কুমিল্লার দেবিদ্বারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গাড়িটির রং ও কাভার পরিবর্তনের কাজ চলছিল।

র‍্যাব-৪, র‍্যাব-৯ ও র‍্যাব সদর দপ্তরের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের যৌথ অভিযানে ২২ মে কুমিল্লা, ঢাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছিনতাই হওয়া সিএনজিটি উদ্ধার এবং পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. সৌরভ সরকার (২০) ঢাকা, মো. ইয়াছিন মিয়া (২০), মো. মুসা (২৫), মো. দুলাল মিয়া (৩২), মো. শাহজালাল (২৬)। তারা সবাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ড ও ছিনতাইয়ের পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছে। পুরো ঘটনার সঙ্গে ৬-৭ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে র‍্যাব। অন্যদের শনাক্তের কাজ চলছে এবং গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।