দেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে আসছে বড় পরিবর্তন। আগামী বছর থেকে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানই ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না—এমন কঠোর পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান এ তথ্য জানান। ভ্যাট ফাঁকি রোধ ও রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করতে সরকারের গৃহীত নতুন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়ে আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যেই ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত ভ্যাট পেয়ার মাত্র ৬ লাখ ৪৪ হাজার, যা মোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অত্যন্ত কম। এনবিআর চেয়ারম্যানের বলেন, ‘বাংলাদেশের যে ব্যবসার পরিমাণ, তার তুলনায় ভ্যাট নেট খুবই ছোট। প্রচুর প্রতিষ্ঠান এখনো নিবন্ধন ছাড়াই ব্যবসা করছে, যা রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে বড় বাধা সৃষ্টি করছে।’
চলতি মাসেই আরও এক লাখ নতুন প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
আমদানি করা মোবাইল ফোনে কর কমানো হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাষ্ট্রের স্বার্থই সর্বাগ্রে। প্রয়োজন হলে এবং জাতীয় স্বার্থে যৌক্তিক মনে হলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এনবিআরের একার পক্ষে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়; এটি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কর অব্যাহতি নীতিমালা কার্যকর হওয়ায় এনবিআরের হাতে আর সরাসরি কর ছাড় দেওয়ার ক্ষমতা নেই। সরকার যদি জনস্বার্থে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তবে অস্থায়ীভাবে কর ছাড় দেওয়া সম্ভব, যা পরবর্তী সংসদে অনুমোদন পেতে হবে।’
নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি ভ্যাট সংগ্রহ ও মনিটরিংকে আরও সহজ এবং স্বচ্ছ করতে আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক একটি নতুন মেকানিজম চালুর প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে নিবন্ধন এড়িয়ে যাওয়া বা ভ্যাট না দেওয়ার সুযোগ থাকবে না।’
সরকার মনে করছে, ভ্যাট নেট বিস্তৃত হলে দেশীয় রাজস্ব বাড়বে এবং আমদানি-নির্ভর রাজস্ব কাঠামোর ওপর চাপ কমবে। এ কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আনুষ্ঠানিক কাঠামোর অধীনে নিয়ে আসতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।



