ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫

ইবির সাংবাদিকতা বিভাগে নবীনবরণ

ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২৫, ০৭:০৯ পিএম
ইবিতে জার্নালিজম বিভাগে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বর্ণিল আয়োজনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন অ্যাকাডেমিক ভবনের ৪৩৯ নম্বর কক্ষে বিভাগের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় নবীন শিক্ষার্থীদের গোলাপ ও রজনীগন্ধা ফুল, ডায়েরি, কলম ও চাবিররিং দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। 

কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রশিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রো উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি, বিভাগের শিক্ষক প্রভাষক তন্ময় সাহা জয় ও উজ্জ্বল হোসাইন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মতিনুর রহমান। সঞ্চালনায় ছিলেন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শান্ত শিশির এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আফরিনা আমিন নদী।

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রশিদুজ্জামান বলেন, ‘বিভাগে আপনাদের সর্বোচ্চ অভিভাবক বিভাগের শিক্ষক-কর্মকর্তা এবং বিভাগের বড় ভাইবোনেরা। ৩০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু হওয়া এই বিভাগের সবাই সবার সাথে আত্মিক সম্পর্কে আবদ্ধ। বিপদে-আপদে একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেকোনো সমস্যায় তাদের স্মরণ করবে। নানা সীমাবদ্ধতায় আরও চমৎকার গর্বিত করার মতো আয়োজন উপহার দিতে না পারায় বিভাগের একজন অভিভাবক হিসেবে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’

শুভেচ্ছা বক্তব্যে অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. একেএম মতিনুর রহমান বলেন, ‘কমিউনিকেশন, মাল্টিমিডিয়া ও জার্নালিজম—৩টি বিষয়ের সমন্বয়ে এই বিভাগ গঠিত হয়েছে, যা অন্য কোনো বিভাগে নেই। এই সুযোগ কাজে লাগালে এক-একজন মানবসম্পদ হিসেবে পরিণত হবে। ফ্যাসিস্ট আমলে সমাজের দর্পণখ্যাত সংবাদপত্র নামক দর্পণটি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। তোমাদের মাধ্যমে আমরা এমন একটি দর্পণ তৈরি করতে চাই যার মাধ্যমে সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা হবে।’

বিশেষ অতিথি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, ‘সাংবাদিক হতে হলে যে সাংবাদিকতা বিভাগেই পড়তে হবে এমনটা না। তবে এই বিভাগটি যখন অ্যাকাডেমিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়া শুরু করেছে তখন এই বিষয়টি শৃঙ্খলাবোধ এবং একটি বিশেষ গুণে গুণান্বিত হওয়া শুরু করেছে। জুলাই আন্দোলনে যে ছবিগুলোর জন্য ফ্যাসিস্ট সরকার পতিত হতে বাধ্য হয়েছে, সেই ছবিগুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিকরাই তুলেছে। বিষয় এবং পেশা হিসেবে বর্তমান বিশ্বে, সমাজে এবং রাষ্ট্রে সাংবাদিকতার গুরুত্ব বাড়ছে। যারা এ বিষয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছেন তারা সঠিকভাবে পড়াশোনা করে ভালো সাংবাদিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে বলে আশা করি।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘সাংবাদিকতা সৎ ও সাহসী পেশা। এটি দেশ, জাতি ও সমাজের উন্নয়নের জন্য কাজ করে। ভার্সেটাইল জিনিয়াস হওয়ার জন্য এই বিভাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকরা সমাজের কথক, তোমরা মানুষের পক্ষ থেকে না বলা কথাগুলো বলবে৷ সমাজের অন্তরালের জিনিস বের করা, উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্নীতি বের করা, পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে লেখা, বিভিন্ন কাজের ত্রুটি লেখা, ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম করা, রাষ্ট্রের এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যা নিয়ে সাংবাদিক কাজ করে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিক তার মুখ, কথা, কাজ দিয়ে সমাজকে উপস্থাপন করে, সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। সাংবাদিকদের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা খুবই চমকপ্রদ বিষয়। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পেশাগত জীবনের ক্ষেত্রেও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের অনেক বড় ক্ষেত্র রয়েছে। তুমি যেকোনো পেশা চয়েজ করতে পারো; কিন্তু সাংবাদিকতার প্রতিটি স্তরেই তোমরা কাজ করতে পারবে৷ ভালো করে পড়াশোনা করলে চাকরির বাজারে সমস্যা হবে না। এ জন্য যেনতেনভাবে সময় পার করলে চলবে না। পড়াশোনাই হবে তোমাদের মূলমন্ত্র। বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনার জায়গা, পড়াশোনা করলে চমৎকার ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারবে৷ মানুষের জন্য কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করবে।’