ঢাকা শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

রাকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ০১:১৯ পিএম
শিবির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের’। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

রাকসু নির্বাচন সামনে রেখে ইসলামী ছাত্র শিবির-সমর্থিত প্যানেল ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ তাদের ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে লিচুতলায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ এ ইশতেহার ঘোষণা করেন।

ইশতেহারে ৭টি বিষয়ে ‘হ্যাঁ’ এবং ৭টি বিষয়ে ‘না’ বলা হয়েছে। ‘হ্যাঁ’- বলা বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ, আবাসন সংকট নিরসন, মানসম্মত খাবার, নিরাপদ ক্যাম্পাস, তথ্যসেবা ও আধুনিকায়ন, সুসম্পর্ক বৃদ্ধি এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণ। অন্যদিকে ‘না’ বলা হয়েছে- হল ফিতে স্বাক্ষরে ৫০ টাকা নেওয়া, হল দখল ও সিট বাণিজ্য, ট্যাগিং ও ফ্রেমিংয়ের রাজনীতি, স্লাট শেমিং, সাইবার বুলিং ও শারীরিক নির্যাতন, ধর্মবিদ্বেষ, মাদক ও ছিনতাই, সন্ত্রাস ও সহিংসতা।

এছাড়াও ছাত্র সংসদের ১২ মাস মেয়াদে ২৪টি সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্যানেলটি। তারা রাকসু নির্বাচনকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা, ১৬ জুলাইকে ‘সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবস’ ঘোষণা, এবং হামলাকারীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, আবাসন ভর্তুকি, গবেষণা বৃত্তি, আধুনিক গ্রন্থাগার, আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এমওইউ চুক্তি ও শিক্ষক বিনিময় কার্যক্রমের কথাও রয়েছে।

প্রশাসনিক ও দৈনন্দিন সেবাকে আধুনিকায়নের জন্য অ্যাপ চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। টিএসসিসি ও অডিটোরিয়ামের ভাড়া শিক্ষার্থীদের সাধ্যের মধ্যে আনা, মেডিকেল সেন্টারে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ, ক্যাম্পাসজুড়ে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ও লাইটিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করার প্রতিশ্রুতিও রয়েছে।

পরিবহন ও নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। গাড়ি নিবন্ধন, বাস ট্রিপ বৃদ্ধি, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সার্বক্ষণিক হেল্পলাইন, ‘চাইল্ড ডে-কেয়ার’ ও প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করা হবে বলে জানানো হয়। শিক্ষক মূল্যায়ন ব্যবস্থা, তথ্যসেবা অ্যাপ, দক্ষতা উন্নয়ন কোর্স, অন-ক্যাম্পাস চাকরি ও পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি বাস্তবায়নের ঘোষণাও রয়েছে।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এদের জন্য লিফট, ব্রেইল পদ্ধতি, অডিওবুক, বিশেষ প্রশিক্ষণ, নিরাপদ উপাসনালয় ও ধর্মীয় উৎসবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হামদ, নাত, কাওয়ালীসহ ইসলামী সংস্কৃতির চর্চার পরিবেশ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও খেলাধুলার বিষয়েও পরিকল্পনা রয়েছে। স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন, ক্রীড়া উন্নয়নে বাজেট বৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়ন, সাহিত্য ও সাংগঠনিক কাজের উন্নয়ন, ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন ক্যাম্পাস’ বাস্তবায়ন এবং অপরাধ দমনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। দলীয় শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করার কথাও উল্লেখ করেছে প্যানেলটি।

ইশতেহার ঘোষণার সময় প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, ‘এটি আকাশকুসুম কোনো প্রস্তাবনা নয়। আমরা এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করব। এ ছাড়া এর জবাবদিহিতার জন্য আমরা চার্ট টাঙানোর ব্যবস্থা করব, যেখানে প্রতিটি কাজ কতটুকু হয়েছে তা উল্লেখ থাকবে।’