পাকিস্তানি শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করায় চরম বিতর্কে পড়েছেন বলিউড তারকা দিলজিৎ দোসাঞ্ঝ। ‘সর্দারজি-৩’ সিনেমায় একাধিক পাকিস্তানি অভিনেতা-অভিনেত্রীর সঙ্গে পর্দা ভাগ করে নিয়ে তিনি দেশজুড়ে সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হয়েছেন। এই উত্তাল পরিস্থিতিতে দিলজিতের পাশে এসে দাঁড়ালেন বর্ষীয়ান অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। তার মন্তব্য যেন বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালল।
নাসিরুদ্দিন বলেন, ‘আমি দিলজিতের পাশে রয়েছি। ‘জুমলা পার্টি’র লোকজন কবে তাকে আক্রমণ করা যায়, সেই সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। অবশেষে তারা একটা ইস্যু খুঁজে পেয়েছে। অথচ সিনেমার কাস্টিং তো পরিচালকের সিদ্ধান্ত, দিলজিতের নয়। কিন্তু পরিচালকের নাম কেউ জানেই না।’
তিনি মনে করেন, দিলজিতের সম্মান ক্ষুণ্ণ করার লক্ষ্যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই বিতর্ক উস্কে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘দিলজিতের খ্যাতি বিশ্বজোড়া, তাই তাকেই আক্রমণের জন্য টার্গেট করা হয়েছে। দিলজিতের মনে কোনো বিদ্বেষ নেই, সে আগেই এ নিয়ে কিছু ভেবে বসে থাকেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা দিলজিতের বিরোধিতা করছে, তারা চায় প্রতিটি ভারতীয় তার পাকিস্তানি বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করুক। এই গুন্ডাদের আসল উদ্দেশ্য হলো, ভারত-পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ধ্বংস করে দেওয়া।
পাকিস্তানিদের প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পাকিস্তানে আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আর প্রিয় বন্ধু আছে। কেউ আমাকে তাদের সঙ্গে দেখা করতে বা ভালোবাসা বিনিময়ে বাধা দিতে পারবে না। আর যারা আমাকে বলবে ‘পাকিস্তানে চলে যাও’, তাদের বলব, ‘আপনি কৈলাসে চলে যান।”’
পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় ধর্মের নামে বর্বর সন্ত্রাসের ঘটনায় নতুন করে পাকিস্তানের প্রতি ভারতের ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে। তারই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানি তারকাদের বিরুদ্ধেও তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই প্রতিবেশী দেশের তারকাদের শোকবার্তাকে দেখছেন লোকদেখানো বলে।
এমন সময়েই দিলজিত দোসাঞ্ঝের ‘সর্দারজি-৩’ সিনেমায় হানিয়া আমির, নাসির চিন্যোতি, ড্যানিয়েল খাওয়ার, সেলিম আলবেলা প্রমুখ পাকিস্তানি তারকার উপস্থিতি নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে।
বিশেষ করে দিলজিতের সঙ্গে হানিয়া আমিরের রোম্যান্সের ভিডিও প্রকাশের পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেটিজেনরা। বিজেপি ঘনিষ্ঠ চলচ্চিত্র সংগঠনগুলোও দিলজিতের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে।
তাদের মতে, বারবার বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে পাকিস্তানি শিল্পীদের ভারতে জায়গা দেওয়া উচিত নয়। তবে অভিনয়শিল্পীদের হিসেবে তাদের বিশ্বাসঘাতকতা করার জায়গাটা ঠিক কোথায় সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট যুক্তি দিতে পারেনি এই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী।