আইকনিক হলিউড অভিনেতা ও অস্কারজয়ী পরিচালক রবার্ট রেডফোর্ড ৮৯ বছর বয়সে মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে উটাহ অঙ্গরাজ্যের প্রোভোর পাহাড়ি বাড়িতে ঘুমের মধ্যেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর কারণ প্রকাশ করা হয়নি। রেডফোর্ডের দীর্ঘদিনের প্রতিনিধি সিন্ডি বার্জার এক বিবৃতিতে জানান, তিনি শান্তিপূর্ণভাবেই মারা গেছেন।
রেডফোর্ড শুধু ১৯৭০-এর দশকের হলিউডের শীর্ষ তারকাই নন, তার অভিনয় ও পরিচালনার প্রতিভাও তাকে কিংবদন্তির আসনে বসিয়েছে। দ্য স্টিং (১৯৭৩)–এর জন্য তিনি সেরা অভিনেতার অস্কারে মনোনীত হন, আর অর্ডিনারি পিপল (১৯৮০) পরিচালনার জন্য অস্কার জেতেন। পরে কুইজ শো (১৯৯৪) পরিচালনার জন্যও মনোনয়ন পান।
২০০২ সালে সম্মানসূচক অস্কার গ্রহণের সময় তিনি বলেন, ‘আমি জীবনের বেশিরভাগ সময় সামনেই তাকিয়েছি, পেছনে ফিরে দেখিনি। আজ রাতে রিয়ারভিউ মিররে তাকিয়ে বুঝতে পারছি, আমারও এক ধরনের ইতিহাস রয়েছে।’
১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা মনিকায় জন্ম নেন রেডফোর্ড। নিউ ইয়র্কের আমেরিকান একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টসে পড়াশোনা শেষে ব্রডওয়েতে অভিনয় শুরু করেন। বেয়ারফুট ইন দ্য পার্ক (১৯৬৩)–এ প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের পর হলিউডে দ্রুত জনপ্রিয়তা পান।
তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে যায় ১৯৬৯ সালে পল নিউম্যানের সঙ্গে বুচ ক্যাসিডি অ্যান্ড দ্য সানড্যান্স কিড–এ সানড্যান্স কিড চরিত্রে অভিনয় করে। পরের কয়েক দশকে তিনি একের পর এক জনপ্রিয় ছবিতে কাজ করেন দ্য ওয়ে উই ওয়্যার (১৯৭৩), দ্য গ্রেট গ্যাটসবি (১৯৭৪), অল দ্য প্রেসিডেন্টস মেন (১৯৭৬), দ্য ন্যাচারাল (১৯৮৪), ইনডিসেন্ট প্রপোজাল (১৯৯৩), দ্য হর্স হুইস্পেরার (১৯৯৮), এবং অল ইজ লস্ট (২০১৩)।
পরিচালক হিসেবেও তিনি ছিলেন সফল। তার উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে অর্ডিনারি পিপল (১৯৮০), আ রিভার রানস থ্রু ইট (১৯৯২), কুইজ শো (১৯৯৪) ও দ্য লেজেন্ড অব ব্যাগার ভ্যান্স (২০০০)। ২০১৮ সালে তিনি ঘোষণা দেন যে দ্য ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য গান–এর পর আর অভিনয় করবেন না। তবে ২০২৫ সালের মার্চে টিভি সিরিজ ডার্ক উইন্ডস–এ সংক্ষিপ্তভাবে আবারও ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান।
রেডফোর্ড শুধু অভিনেতা বা পরিচালক নন, তিনি ছিলেন হলিউডের সাংস্কৃতিক আইকন। তার অবদান প্রমাণ করে, বড় পর্দার আকর্ষণ একদিকে যেমন তারকার ব্যক্তিত্বে গড়ে ওঠে, তেমনি শিল্পীসত্ত্বার গভীরতায়ও।
সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস