ঢাকা শুক্রবার, ৩০ মে, ২০২৫

সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২৫, ০৬:৩৯ এএম
ছবি- সংগৃহীত

আমাদের দেশের আগের প্রজন্মের মানুষরা শরীরকে সুস্থ-সতেজ রাখার জন্য প্রতিদিন সকালে হাঁটাহাঁটি, ব্যায়াম ও যোগচর্চা করতেন। অথচ আজকের যুব সমাজ কর্মব্যস্ত জীবনের চাপে এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছে, যেখানে সকালে শরীরচর্চার কথা মাথায়ই থাকে না। এর ফলে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যার ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।

সুস্থ জীবনযাপনের জন্য যেমন পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ জরুরি, তেমনি প্রতিদিনের শারীরিক অনুশীলনও শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্যায়াম শরীর ও মন—উভয়কে সুস্থ রাখে। বিশেষ করে সকালের ব্যায়াম হতাশা ও মানসিক চাপ কমিয়ে এক ধরনের প্রাকৃতিক ওষুধের মতো কাজ করে।

এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা সম্পর্কে...

জীবনে শৃঙ্খলা ও উন্নতি আনবে

প্রতিদিন ভোরে উঠে শরীরচর্চা করার অভ্যাস গড়ে তুললে ধীরে ধীরে তা আপনার জীবনের একটি অংশ হয়ে উঠবে। এটা শুধু শরীর নয়, মনকেও সতেজ রাখবে এবং জীবনযাত্রায় শৃঙ্খলা ও ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। মাত্র দুই মাস নিয়মিত সকালবেলা ব্যায়াম করলেই আপনি নিজেই অনুভব করবেন আপনার জীবনে কী পরিবর্তন এসেছে।

পেশী শক্তিশালী ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি

সকালে শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা তুলনামূলক বেশি থাকে, যা পেশী গঠনে সহায়তা করে। তাই সকালবেলা অনুশীলন করলে পেশী মজবুত হয় এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে শারীরিক সক্ষমতা বাড়ে। যারা পেশী দুর্বলতার সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য সকালের ব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী।

মানসিক চাপ ও স্ট্রেস হ্রাস করে

বর্তমান সময়ে মানসিক চাপ একটি বড় সমস্যা। নিয়মিত সকালবেলার ব্যায়াম স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যার ফলে মন থাকে শান্ত এবং কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। এটা এক ধরনের প্রাকৃতিক ‘মুড বুস্টার’ হিসেবেও কাজ করে।

ঘুমের মান উন্নত করে

যারা রাতে ঘুমের সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য সকালের ব্যায়াম হতে পারে কার্যকর সমাধান। অনুশীলন শরীরে ক্লান্তি তৈরি করে এবং রাতে গভীর ও নিরবচ্ছিন্ন ঘুমে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে ব্যায়াম করলে ঘুমের মান সন্ধ্যার ব্যায়ামের তুলনায় বেশি উন্নত হয়।

ওজন কমাতে সহায়ক

ওজন কমানোর জন্য সকালের ব্যায়াম সবচেয়ে কার্যকর। খালি পেটে হালকা ব্যায়াম শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত মর্নিং এক্সারসাইজ করলে দ্রুত ফ্যাট বার্ন হয়, ফলে শরীরের গঠন পরিবর্তন হয় এবং আপনি নিজেকে আরও ফিট ও আত্মবিশ্বাসী মনে করবেন।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কার্যকর

সকালের ব্যায়াম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালের শারীরিক অনুশীলন ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় এবং শরীরকে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে।

দীর্ঘায়ু ও হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক

নিয়মিত সকালের ব্যায়াম হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়ায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং দীর্ঘায়ু লাভে সহায়তা করে। দৌড়, জগিং, brisk walking বা হালকা খেলাধুলা হৃদরোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর।

ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে

বিশ্বব্যাপী মহামারীর প্রেক্ষাপটে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। সকালের অনুশীলন শরীরকে সক্রিয় রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে মজবুত করে, যা ভাইরাসজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

ওয়ার্ক ফ্রম হোমের যুগে শরীরকে সক্রিয় রাখে

বর্তমানে অধিকাংশ মানুষই দীর্ঘ সময় বসে কাজ করেন। সকালে ৩০ মিনিটের ব্যায়াম সারা দিনের জন্য শরীরে সক্রিয়তা এনে দেয়। এটি শুধু স্বাস্থ্য ভালো রাখে না, বরং Productivity বা কাজের গুণগত মানও বাড়ায়।