বর্তমান সময়ে দ্রুত আবহাওয়ার পরিবর্তন, ধুলাবালি এবং দূষণের কারণে অনেকেই নানা শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। এসব সমস্যা থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ যত্ন নিতে প্রাচীনকাল থেকেই গরম পানির ভাপ নেওয়ার প্রচলন রয়েছে।
এই ঘরোয়া পদ্ধতিতে শ্বাসযন্ত্রের নানা জটিলতা থেকে শুরু করে ত্বকের পরিচর্যা—সবকিছুতেই মেলে উপকার। বিশেষ করে সর্দি-কাশি, সাইনাস, ঠাণ্ডা লাগা কিংবা ত্বকের উজ্জ্বলতা ফেরাতে গরম পানির ভাপ অত্যন্ত কার্যকর।
নিচে গরম পানির ভাপ নেওয়ার কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা তুলে ধরা হলো-
১. সাইনাস ও শ্বাসকষ্ট উপশমে সহায়ক
গরম পানির বাষ্প নাক ও গলার শ্লেষ্মার জমাট ভাব কমাতে সাহায্য করে। এটি সাইনাসের ব্লকেজ খুলে দেয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ করে তোলে। ফলে সর্দি-কাশি বা সাইনাসজনিত মাথাব্যথা উপশম হয়।
২. সর্দি-কাশি এবং ঠাণ্ডার উপশম
গরম পানির ভাপ গলার শুষ্কতা কমিয়ে দেয় এবং মিউকাস পাতলা করে দেয়। এর ফলে কাশি কমে যায় এবং ঠাণ্ডাজনিত অস্বস্তি দ্রুত কমে আসে।
৩. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
গরম পানির ভাপ ত্বকের ছিদ্রগুলো খুলে দেয়। ফলে জমে থাকা ময়লা, তেল এবং মৃত কোষ বের হয়ে যায়। এতে ত্বক হয়ে ওঠে আরও উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত। ব্রণ বা ব্ল্যাকহেডস কমাতেও এটি কার্যকর।
৪. মানসিক প্রশান্তি দেয়
গরম ভাপ নেওয়ার সময় শরীরের পেশী শিথিল হয় এবং মনও অনেকটা প্রশান্ত হয়। এটি স্ট্রেস কমাতে এবং স্নায়ু শিথিল করতে সাহায্য করে।
৫. রক্তসঞ্চালন উন্নত করে
গরম বাষ্প শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে রক্তনালিগুলো সম্প্রসারিত করে। ফলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং কোষে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি পায়, যা সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়ক।
৬. ঠাণ্ডাজনিত মাথাব্যথা উপশম
সর্দি-কাশি বা সাইনাসজনিত কারণে সৃষ্ট মাথাব্যথা কমাতে গরম পানির ভাপ বেশ কার্যকর। বাষ্পের তাপ মাথার রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি করে এবং ব্যথা কমিয়ে দেয়।
গরম পানির ভাপ নেওয়ার সঠিক সময়-
১. সর্দি-কাশি বা সাইনাস হলে
২. ঠাণ্ডাজনিত মাথাব্যথা হলে
৩. ঠাণ্ডা লাগা বা গলা ব্যথা শুরু হলে
সতর্কতা-
খালি পেটে বা ভরাপেটে ভাপ না নেওয়াই ভালো।
খাবার খাওয়ার অন্তত ১ ঘণ্টা পরে নিন।
খুব ছোট শিশুদের বা গুরুতর শ্বাসকষ্ট রোগীদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ভাপ নেওয়া ঠিক নয়।
গরম পানির খুব বেশি তাপ যেন মুখে না লাগে।