ঢাকা মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫

সুগার ড্যাডি চক্র বন্ধে আইনি নোটিশ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৫, ০১:২৪ পিএম
আইনি নোটিশ। প্রতীকী ছবি

‘সুগার ড্যাডি’ চক্র দমনে সরকারের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও পুলিশ সদর দপ্তরে এই নোটিশ পাঠান তিনি। 

নোটিশে বলা হয়েছে যে, এই তথাকথিত সুগার ড্যাডিরা তরুণীদের জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনছে। অর্থের অভাবে, পরিবারিক চাপের কারণে বা প্রলোভনে পড়ে অনেক মেয়ে এমন এক অস্থির মানসিক অবস্থায় জড়িয়ে যাচ্ছে, যেখান থেকে বের হতে পারছে না। বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, এই মেয়েদের কাছে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ, দামি ফোন/আইফোন, ব্র্যান্ডেড পোশাক, গহনা, গাড়ি, বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ এবং বিলাসবহুল ফ্ল্যাট দেওয়া হচ্ছে। এসব অর্থের কোনো বৈধ উৎস নেই, কর নথিতে প্রদর্শিত হয় না এবং অনেক ক্ষেত্রে সরাসরি কালো টাকা, অবৈধ লেনদেন বা মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে আসছে। অর্থনীতিতে এভাবে অনিয়ন্ত্রিত ও অপ্রদর্শিত অর্থের প্রবাহ রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি ও কর প্রশাসনের জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন অভিযোগ ছড়িয়ে পড়েছে যে, অনেক তরুণীকে মানসিক চাপ, ভয়ভীতি বা প্রলোভনের মাধ্যমে গোপনে অশ্লীল বা ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে এবং পরে সেগুলো ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইল, যৌন শোষণ ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই ধরনের ব্ল্যাকমেইলিং শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের ওপর ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলছে। অনেক মেয়ে এই চক্র থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে তাদের পরিবারে অপমান, সামাজিক লাঞ্ছনা, নিরাপত্তাহীনতা ও ভবিষ্যৎ ধ্বংসের আশঙ্কা আরও বাড়ছে।

নোটিশে বলা হয়েছে যে, সুগার ড্যাডিরা কেবল তরুণী ও নারীদের শোষণেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি দেশের বহু পরিবারকে অস্থির করে তুলছে। অনেক সুগার ড্যাডির স্ত্রী ও সন্তানরা দীর্ঘদিন মানসিক চাপ, অবহেলা, পারিবারিক নির্যাতন ও অপমানের শিকার হচ্ছে। যার পরিণতিতে বিবাহবিচ্ছেদ, পারিবারিক ভাঙন এবং গভীর সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। এটি সরাসরি বাংলাদেশের পরিবারব্যবস্থা ও সামাজিক মূল্যবোধের উপর আঘাত হানছে।

মো. মাহমুদুল হাসান আইনি নোটিশে আরও উল্লেখ করেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, সিআইডি, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, সাইবার ক্রাইম ইউনিট এবং এনবিআর এর সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী জাতীয় টাস্কফোর্স গঠন করে এই চক্র ভেঙে দিতে হবে। একইসঙ্গে তরুণীদের কাছে প্রবাহিত অস্বাভাবিক অপ্রদর্শিত অর্থের উৎস তদন্ত করা, আর্থিক অপরাধ শনাক্ত করা, ব্ল্যাকমেইল ভিডিও-ছবি শনাক্ত করে অপসারণ করা, এবং এই সুগার ড্যাডিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এতে বলা হয়েছে, সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া হলে, সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি জনস্বার্থে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে।