বর্তমান সময়ে বন্ধ্যাত্ব ও প্রজনন সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ দিন দিন বাড়ছে। চিকিৎসকদের মতে, সন্তান ধারণে ব্যর্থতার প্রায় অর্ধেক ক্ষেত্রেই পুরুষের শুক্রাণু সংক্রান্ত জটিলতা দায়ী। খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন ও মানসিক চাপ সরাসরি প্রভাব ফেলে শুক্রাণুর সংখ্যা, গুণগত মান ও কার্যক্ষমতার ওপর। সময়মতো সচেতন না হলে ভবিষ্যতে এই সমস্যা আরও জটিল হতে পারে।
কেন কমে যাচ্ছে শুক্রাণুর মান?
অতিরিক্ত ধূমপান, মদ্যপান, দূষিত পরিবেশ, অনিয়ন্ত্রিত ওজন, দীর্ঘ সময় বসে কাজ করা, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব এবং পুষ্টিহীন খাবার পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ফলিক এসিড ও ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ঘাটতির কারণে শুক্রাণু দুর্বল হয়ে পড়ে।
যেসব খাবার শুক্রাণু বাড়াতে সহায়ক
বাদাম ও বীজ: আখরোট, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম ও কুমড়োর বীজে রয়েছে জিঙ্ক ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, যা শুক্রাণু উৎপাদন ও গতিশীলতা বাড়ায়।
সবুজ শাকসবজি: পালং শাক, লেটুস ও ব্রোকলিতে থাকা ফলিক এসিড শুক্রাণুর ডিএনএ গঠন ঠিক রাখতে সহায়তা করে এবং ত্রুটির ঝুঁকি কমায়।
মাছ ও সামুদ্রিক খাবার: ইলিশ, স্যামন, টুনা মাছ ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ। এটি শুক্রাণুর গতি বৃদ্ধি করে ও আকৃতি উন্নত করে।
ডিম: ডিমে থাকা ভিটামিন ই ও সেলেনিয়াম শুক্রাণুকে অক্সিডেটিভ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
ঝিনুক ও শামুক জাতীয় খাদ্য: জিঙ্কের উৎকৃষ্ট উৎস হিসেবে ঝিনুক টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ফলমূল: কলা শরীরের হরমোন ভারসাম্য রক্ষা করে। ডালিম অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাধ্যমে শুক্রাণুর ক্ষয়প্রক্রিয়া ধীর করে।
ডার্ক চকলেট: গবেষণায় দেখা গেছে এতে থাকা এল–আর্জিনিন শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
খাবারের পাশাপাশি যে বিষয়গুলো মানা জরুরি
শুধু পুষ্টিকর খাবার খেলেই হবে না। ধূমপান ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল বর্জন, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম, মানসিক চাপ কমানো এবং অন্তত সাত ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি দীর্ঘ সময় ল্যাপটপ বা গরম পরিবেশে কাজ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন