বনের ৮৭৫ একর জমির বরাদ্দ বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আরও ১৩ হাজার ৫৬৭ একরের বরাদ্দ শিগগির বাতিল হচ্ছে। গত তিন দশকে সারাদেশে সরকারি ৪৫টি সংস্থাকে ১ লাখ ৬১ হাজার একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এসব জমির বড় অংশে এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
শুক্রবার (২১ মার্চ) এমন প্রেক্ষাপটে সরকারি-বেসরকারিভাবে বিশ্ব বন দিবস পালন করা হবে।
এবারের প্রতিপাদ্য- `বন-বনানী সংরক্ষণ, খাদ্যের জন্য প্রয়োজন`। পরিবেশবিদরা বলছেন, স্থাপনাকে উন্নয়নের `হাতিয়ার` দেখাতে সরকারই বনভূমি দখলে মদদ দিয়েছে। এতে কমছে বনভূমি; ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রাণবৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র। বনের জমি দখলমুক্ত করতে সরকারের শক্ত পদক্ষেপ চান তারা।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজারে হাজার হাজার একর বনভূমি সরকারি সংস্থার কবজায় রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের অধীনে সারাদেশে রয়েছে ৫৩ হাজার ৫৭৯ একর ভূমি। প্রতিষ্ঠানটি শুধু কক্সবাজারেই দখলে নিয়েছে ৪৩ হাজার ৯৫ একর। জেলাটিতে সেনা, বিমান ও নৌবাহিনী এবং র্যাব ও বিজিবির অধীনে রয়েছে ৯৩ হাজার ৯২৩ একর।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও গাজীপুরে অন্তত ৩০টি সরকারি সংস্থা বনভূমি বরাদ্দ নিয়েছে। সবচেয়ে বরাদ্দ বেশি নোয়াখালীতে ৮৬ হাজার ৭০০ একর। দ্বিতীয় চট্টগ্রামে, ২৭ হাজার ৬৯৮ একর। টাঙ্গাইলে ১৪ হাজার ৯৯৩, কক্সবাজারে ১৪ হাজার ২৩২ ও সিলেটে ৯ হাজার ১৫৬ একর।
জাতীয় বননীতির ১৯ নম্বর ঘোষণায় উল্লেখ আছে, সরকারি মালিকানাধীন বনভূমি বনায়ন ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু এসব জমিতে নিত্যনতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
২০২২ সালে কক্সবাজার বিভাগীয় বন কার্যালয় থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার কক্সবাজারে ৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার ২৮৮ একর বনভূমি বরাদ্দ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট, শহীদ এটিএম জাফর আলম মাল্টিডিসিপ্লিন একাডেমি ও বিপিসির মতো প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয়, ফেরতের শর্তে ২০২১ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়কে বনের ১২ হাজার ৩৪১ দশমিক ৮১ একর জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়, যেখানে পাহাড় ও গাছ কেটে তৈরি হচ্ছে স্থাপনা; চাষ হচ্ছে চিংড়ি।
২০১৯ সালের বাংলাদেশ বন বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ভূখণ্ডের ২৫ শতাংশ বনভূমি না থাকলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। দেশে বন আচ্ছাদিত এলাকা মোট ভূমির ১২ দশমিক ৮ শতাংশ। যদিও এখানে বনের বাইরের গাছ আমলে নেওয়া হয়নি। তবে বন বিভাগের নতুন সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বনের বাইরে গাছের পরিমাণ মোট ভূমির ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। এসব গাছের বেশির ভাগই সামাজিক বনায়নের। বনের ভেতর ও বাইরে বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকা মোট ভূমির প্রায় সাড়ে ২২ শতাংশ।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বনভূমি বরাদ্দের অর্থ এটিকে অপ্রয়োজনীয় মনে করা। সব প্রতিরোধ উপেক্ষা করে আমরা বন উদ্ধারে মনোযোগ দিয়েছি। বিভিন্ন সংস্থার নামে বরাদ্দ বাতিল করা হচ্ছে। দখলদার যত প্রভাবশালীই হোক, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 
                             
                                    -(1)-20250321052459.webp)
 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031160223.webp) 
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন