ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫

গভীর রাতে সাংবাদিক-ব্যবসায়ীকে তুলে নেওয়ার ঘটনায় টিআইবির উদ্বেগ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

বিটিআরসির ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) নিয়ে মতামত দেওয়ার পর এক সাংবাদিক ও মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাকে গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সংগঠনটি জানিয়েছে, যথাযথ অভিযোগ ছাড়া নাগরিককে তুলে নেওয়া আইনের শাসন, মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থি।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে টিআইবি ঘটনাটিকে ‘অস্বচ্ছ ও জবাবদিহিহীন অভিযান’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে জানায়, এটি অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত মানবাধিকারভিত্তিক রাষ্ট্র সংস্কারের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং সমালোচনা দমনের ইঙ্গিত বহন করে।

টিআইবি জানায়, গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্য অনুযায়ী এনইআইআর বিষয়ে প্রকাশ্যে মতামত দেওয়ায় সাংবাদিক ও সংগঠনের নেতাকে গভীর রাতে তুলে নিয়ে দীর্ঘ সময় ডিবি হেফাজতে রাখা হয়। কখনো বলা হয় ‘তথ্য যাচাই’, আবার কখনো সংবাদ সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্রে ব্যবহৃত পদবি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, যা টিআইবির মতে পরস্পরবিরোধী ও অসত্য ব্যাখ্যা।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ভিন্নমত দমনে গভীর রাতে কারণ না জানিয়ে তুলে নেওয়া কর্তৃত্ববাদী নিপীড়নের উদাহরণ। অভিযোগ থাকলে আইন অনুযায়ী সমন জারি আর আইনজীবীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার নিয়ম স্পষ্টভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শুধু ব্যক্তিবদল নয়, গোয়েন্দা ও নজরদারি সংস্থার কাঠামোগত সংস্কার অপরিহার্য। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার নামে নজরদারি সংস্কৃতি চলতে থাকলে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন কঠিন হবে।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, সমালোচক মানেই শত্রু এই মানসিকতা আত্মঘাতী। সংবাদ সম্মেলন করা বা সরকারি নীতির সমালোচনা করা কোনো অপরাধ নয়; বরং সংবিধানের ৩৭, ৩৮ ও ৩৯ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত নাগরিক অধিকার।

এনইআইআর নিয়ে মতামত দেওয়ার কারণে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদকে টিআইবি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডেরও লঙ্ঘন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।