ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় নতুন তথ্য সামনে এসছে। হামলাকারীরা দুই সপ্তাহ আগে হাদির নির্বাচনি প্রচারণার টিমে যোগ দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের একজন সদস্য।
ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য মোহাম্মদ ওসামা বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘একটি মোটরসাইকেলে করে আসা দুই জনের মধ্যে একজনই হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দুই ব্যক্তি প্রায় দুই সপ্তাহ আগে প্রচারণার টিমে যোগ দিয়েছিল। এরপর কিছুদিন তাদের দেখা যায়নি। কয়েকদিন আগে তারা আবার এসে প্রচারণার কাজে অংশ নেয়।’
এদিকে, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনার তদন্তের অংশ হিসেবে ভিডিও ফুটেজ এবং সিসিটিভি ক্যামেরার রেকর্ড সংগ্রহ করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা সব তথ্য যাচাই করে দেখছেন।
পুলিশি তদন্তে জানা গেছে, গুলিকারী দুই জনের মধ্যে একজনের গায়ে কালো পাঞ্জাবি, কালো মাস্ক, গলায় চাদর ও আকাশি রঙের প্যান্ট, অন্যজনের গায়ে কালো ব্লেজার, কালো মাস্ক, চোখে চশমা এবং চামড়ার রঙের জুতা। ধারণা করা হচ্ছে, হামলাকারীরা আগে মতিঝিল ওয়াপদা মাদরাসা এলাকায় হাদির সঙ্গে জনসংযোগে অংশ নিয়েছিল, এবং তাদের পোশাক হামলার সময়ের পোশাকের সঙ্গে মিল রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। ফুটেজ বিশ্লেষণ করলে আমরা বুঝতে পারব, কতজন এবং কারা এ ঘটনায় যুক্ত।’
এর আগে, শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে নির্বাচনি প্রচারণা চলাকালীন রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় দুজন ব্যক্তি মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজ শেষে মোটরসাইকেলটি মতিঝিল দিক থেকে আসে। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি ক্লোজ রেঞ্জ থেকে হাদির মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়। হামলার পর মোটরসাইকেলটি দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে।
হাদিকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন অস্ত্রোপচার শেষে পর্যবেক্ষণের জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বর মাসে হাদি দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে হুমকি পেয়েছিলেন। ১৪ নভেম্বর ফেসবুকে তিনি জানান, তাকে হত্যা, বাড়িতে আগুন দেওয়া এবং তার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
হাদি লিখেছিলেন, ‘গত তিন ঘণ্টায় আমার নম্বরে আওয়ামী লীগের খুনিরা অন্তত ৩০টি বিদেশি নম্বর থেকে কল ও টেক্সট করেছে। তারা আমাকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখছে, বাড়িতে আগুন দেবে, পরিবারের ওপর হামলা করবে এবং আমাকে হত্যা করবে।’



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন