বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, লেখক, গবেষক ও ইতিহাসবিদ বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)’র চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এক শোকবার্তায় তারা বলেন, ‘বদরুদ্দীন উমর বাংলাদেশের রাজনীতির এক খোলা ইতিহাস। তিনি গণমানুষের মুক্তি এবং আওয়ামী ফ্যাসীবাদের চরিত্র উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।’
এর আগে সকাল ১০টা ০৫ মিনিটে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান প্রখ্যাত এই বুদ্ধিজীবী। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
বদরুদ্দীন উমরের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার এক উচ্চবিত্ত পরিবারে। বাবা বিখ্যাত রাজনীতিবিদ আবুল হাশিম ছিলেন অবিভক্ত বাংলার মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ১৯৪৭ সালে কংগ্রেস নেতা শরৎ বসুর সঙ্গে মিলে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এ প্রক্রিয়ায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, কিরণশঙ্কর রায় প্রমুখ যুক্ত হয়েছিলেন।
বর্ধমানের এই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন- কংগ্রেস, মুসলিম লীগ ও কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। তাদের বাড়িতে উপমহাদেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদরা আসতেন। এমনই রাজনৈতিক পরিবেশে বদরুদ্দীন উমরের বেড়ে ওঠা।
১৯৬১ সালে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ে পিপিই ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন বদরুদ্দীন উমর। ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন।
গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতি ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। তার লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ।
এরপর ৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টিতে (মার্ক্সবাদ-লেলিনবাদ) যোগ দেন। ১৯৭০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ৭১ সালের মার্চ পর্যন্ত পার্টির মুখপত্র গণশক্তি সম্পাদনা করেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পার্টির লাইনের বিরোধিতা করে পার্টিতে পরপর দুটি দলিল প্রদান করেন। ডিসেম্বরে মতাদর্শিক কারণে ইপিসিপি থেকে পদত্যাগ করেন।
তিনি বাংলাদেশ লেখক শিবির, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোট প্রভৃতি সংগঠনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।