জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘বঙ্গোপসাগর ঘিরেই আগামী বাংলাদেশের উন্নয়ন নির্ধারিত হবে, আর সেই সম্ভাবনার কেন্দ্রস্থল হবে বরগুনা। উপকূলের মানুষের অধিকার, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এখানে এনসিপির ঘাঁটি গড়ে তুলতে হবে।’
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলনে বরগুনার ১০ জন শহিদ হয়েছেন, তাদের আমরা জাতীয় বীর হিসেবে শ্রদ্ধা জানাই। বরগুনাবাসী দুর্যোগ, নদীভাঙন ও অবহেলার মধ্যেও সংগ্রাম করে টিকে থাকেন। উন্নয়নের নামে প্রতিশ্রুতির মুলা ঝুলানো হলেও তা বরগুনায় এসে পৌঁছায় না।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে আবারও চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আমরা সেই সিস্টেম ভাংতে চাই, যে সিস্টেম এসব মাফিয়াদের টিকিয়ে রাখে।’
পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী হত্যার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বরগুনার সন্তান সোহাগকে পাথর দিয়ে জনসমক্ষে হত্যার রাজনীতি বরগুনাবাসী চায় না। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং এর বিরুদ্ধে জনগণকে প্রতিবাদে নামার আহ্বান জানাই।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা সংস্কার চাই—একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন, শক্তিশালী দুর্নীতি দমন কমিশন এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ওপর গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ চাই। বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্র বা কোনো মতাদর্শগত পুনর্বাসনের রাজনীতি চলতে দেবো না। মুজিববাদ কিংবা পাকিস্তানপন্থা নয়, আমরা চাই বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি।’
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মূখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের পথ রুদ্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে, তবে আমরা জানিয়ে দিতে চাই—বাধা দিলে হবে লড়াই, আর সেই লড়াইয়ে আমরা জিতব। তরুণ প্রজন্মকে দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতি নিতে হবে।’
সভায় প্রথমবার বরগুনায় কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এনসিপির উত্তরাঞ্চলীয় মূখ্য সংগঠক ও স্থানীয় জামাতা সারজিস আলম জনতার উষ্ণ অভ্যর্থনা পান। তিনি বলেন, ‘সরকার বলেছে দক্ষিণাঞ্চল নাকি উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে, অথচ বরগুনায় এসে দেখি রাস্তাঘাট ভেঙে পড়েছে। ওসি নিজে আমাদের সহযোদ্ধাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছেন—আমরা জনগণের পুলিশ চাই, দলীয় নয়।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব জাফরিন জারা, শামান্তা শারমীন এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়ক তালাত মোহামুদ রাফি।