পঞ্চপাণ্ডবে লন্ডভন্ড আওয়ামী লীগ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৪, ০৩:৪৯ পিএম

পঞ্চপাণ্ডবে লন্ডভন্ড আওয়ামী লীগ

ফাইল ছবি

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তার পর পরই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় হয়ে পড়ে।  টানা ১৫ বছর টানা ক্ষমতায় থাকা দলটির প্রধান যখন ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান তখন আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াও দুস্কর হয়ে পড়ে।  তবে দলটির সাংগঠনিক শক্তি যে আগে থেকেই ভেতরে ভেতরে দুর্বল হয়ে পড়েছিল, সেটি এখন আবার প্রকাশ পেল।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার পরে মূলত পাঁচ শীর্ষ নেতা দলটির পরিচালনা করেছেন।  আর এই পঞ্চপাণ্ডবের কারণে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক লন্ডভন্ড হয়েছে বলে মনে করেন দলের অনেক নেতাকর্মী।

আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ পাঁচ নেতা হলেন— দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।

তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর দাবি, দলের নিয়মতান্ত্রিক সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ছেদ পড়েছে পঞ্চপাণ্ডবের কারণে। দলীয় পদ দেওয়া, দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া বা না দেওয়ার বিষয়টি তারাই নিয়ন্ত্রণ করতেন। শেষ দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে দল কাকে মনোনয়ন দেবে না দেবে, সেটিও ঠিক করেছেন এই পাঁচ নেতা।  এছাড়া পছন্দের লোককে নেতা বানিয়ে নিজেদের দল ভারি করেছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য দেশে শীর্ষ এক গণমাধ্যমকে বলেন, একসময় জেলার কমিটি অনুমোদন দিতেন দলের সভাপতি। তার স্বাক্ষরেই বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হতো। গত চার বছর ধরে কমিটি অনুমোদন দিতেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অনুমোদিত কমিটিতে লেখা থাকত সভাপতির সম্মতিক্রমে।  দলীয় এক সভায় প্রসঙ্গটি টেনে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, আগে জেলা কমিটি তার স্বাক্ষরে অনুমোদন হতো। এখন সেটিও আর লাগে না। সভাপতির অনুমোদনক্রমে লিখে প্রকাশ করে দেওয়া হয়। তার দাবি, এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে জেলা কমিটিগুলোয় পছন্দের লোকদের নেতা বানাতেন পঞ্চপাণ্ডব। তাদের কেউ কেউ এভাবে ‘কমিটি বাণিজ্য’ করার সুযোগ পেয়েছেন।

জানা গেছে, পদপদবি থাকলেও সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ছিল না অন্তত ৫০ নেতার। সভা-সমাবেশে পেছনের সারিতে বসে থেকে অলস সময় কাটানো ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় আসা-যাওয়া করা ছাড়া আর কোনো কাজ ছিল না তাদের।

তবে দলটির সূত্রগুলোর দাবি, ২০২০ সালের পর আওয়ামী লীগে পঞ্চপাণ্ডবের ক্ষমতা বেড়ে যায়। তারা দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে ঘিরে থাকায় অন্য নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।  ফলে দলীয় সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ন্ত্রিত হয়ে যাওয়ার পর পঞ্চপাণ্ডবের মাধ্যমে পাওয়া তার নির্দেশনা সম্পর্কে সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের সুযোগ থাকত না অন্য কারও।

আরবি/জেআই

Link copied!