নতুন শুরুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফিফা যে ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজন করছে, সেটি এখন উদ্বোধনী দিনেই হুমকির মুখে।অভিবাসন-নিরাপত্তা ইস্যু, রাজনৈতিক বিভাজন এবং স্টেডিয়ামের বাইরে সম্ভাব্য বিক্ষোভ সব মিলিয়ে ইনফান্তিনোর নেতৃত্বে ফিফার জন্য এটি একটি কঠিন পরীক্ষা হতে চলেছে।
নতুন ফরম্যাটে ৩২ দল নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫। তবে মাঠে বল গড়ানোর আগেই উদ্বোধনী ম্যাচ ও অনুষ্ঠান ঘিরে তৈরি হয়েছে জটিল রাজনৈতিক বিতর্ক, নিরাপত্তা শঙ্কা ও সামাজিক অস্থিরতা।
শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য উদ্বোধনী ম্যাচের আগে ফিফার প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোকে বিপাকে ফেলেছে নিউ ইয়র্কভিত্তিক র্যাপার ফ্রেঞ্চ মনটানার রাজনৈতিক বক্তব্য।
এই দেশ অভিবাসীদের ঘামে গড়া— ফ্রেঞ্চ মন্টানা
মরক্কো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী হিসেবে আসা ফ্রেঞ্চ মন্টানা বলেন, আমি এমন কাউকে সম্মান করি না, যে শত শত পরিবার ধ্বংস করে দেয়, যারা এখানে ২০ বছর থেকেও অপরাধ না করেও ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
এই দেশটি অভিবাসীদের দ্বারা গঠিত, কেউ আসলে এখানকার না।
মন্টানার এই বক্তব্য ফিফার ‘অরাজনৈতিক ভাবমূর্তির’ সঙ্গে সাংঘর্ষিক, বিশেষ করে যখন ইনফান্তিনো প্রকাশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা প্রদর্শন করে যাচ্ছেন।
অভিবাসন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতি উদ্বেগ বাড়িয়েছে
ফিফার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও ম্যাচ ঘিরে মার্কিন অভিবাসন ও কাস্টমস সংস্থা (আইসিই) এবং সীমান্ত নিরাপত্তা সংস্থা (সিবিপি) সরাসরি নিরাপত্তা কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে।
তাদের উপস্থিতি অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
সিবিপি-এর এক ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছিল, তারা ‘সাজসরঞ্জামে সজ্জিত হয়ে প্রস্তুত’ ফিফার ম্যাচের নিরাপত্তার জন্য। যদিও পরে তারা পোস্টটি মুছে দেয়।
তাতেই প্রশ্ন উঠেছে ‘ফিফার মত বিশ্বমঞ্চে কেন ট্রাম্প প্রশাসনের বিতর্কিত সংস্থাগুলোকে জায়গা দেওয়া হলো?’।
মিয়ামিতে বিক্ষোভ, উদ্বোধনী ম্যাচের আগে ট্রাম্পবিরোধী আন্দোলন
উদ্বোধনী ম্যাচটি এমন এক দিনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেদিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পের নির্বাহী ক্ষমতার বিরুদ্ধে ‘নো কিংস’ নামে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
মিয়ামি শহরেই ১০টি বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়েছে, যার একটি আয়োজিত হচ্ছে হার্ড রক স্টেডিয়াম থেকে মাত্র আধঘণ্টার দূরত্বে।
অন্যদিকে ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডেস্যান্টিস এমন মন্তব্য করে আরও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন, যেখানে তিনি জনগণকে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের গায়ে গাড়ি তুলে দেওয়ার অনুমতি দেন ‘আত্মরক্ষার’ নামে।
ফিফা কর্মকর্তাদের নৌভ্রমণেও অভিযান
উদ্বোধনের আগে ফিফা ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের একটি বিলাসবহুল নৌভ্রমণেও হানা দেয় সিভিপি। টেলেমুন্ডো চ্যানেল আয়োজিত এ ভ্রমণে নিরাপত্তা ত্রুটির অভিযোগে অভিযান চালানো হয়।
যদিও পরে মিয়ামির মেয়র ড্যানিয়েলা লেভিন কাভা এ ঘটনাকে ‘গভীরভাবে উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেন।