ঢাকা মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

১৬ বছরেই জীবন প্রদীপ নিভল অধিনায়ক সুস্মিতার

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০১:২৮ পিএম
সুস্মিতা (১৬)। ছবি- সংগৃহীত

মাত্র ১৬ বছর বয়সেই থেমে গেল সবকিছু। চোখে একরাশ স্বপ্ন আর মনে উদ্যমতা নিয়ে খেলার মাঠে দৌড়ঝাঁপ করা সুস্মিতা আর নেই। সুস্মিতা মেহেরপুর জেলা নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক ও মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন প্রতিভাবান এই কিশোরী ক্রীড়াবিদ।

পরিবারের দাবি, প্রায় এক মাস আগে ভুলবশত অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবনের পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুস্মিতা। যশোর ও পরে ঢাকায় দীর্ঘ চিকিৎসা চললেও শেষ পর্যন্ত আর সুস্থ হয়ে মাঠে ফেরা হলো না তার।

চিকিৎসকদের মতে, ঘুমের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কিডনিতে জটিলতা দেখা দেয়, যা ধীরে ধীরে আরও গুরুতর রূপ নেয়। শেষ পর্যন্ত এই জটিলতার কারণেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমাতে হয় তাকে।

মেহেরপুর সদর উপজেলার হরিরামপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের নাতনি সুস্মিতা বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর ছোটবেলা থেকেই নানাবাড়িতে বড় হন। অভাব-অনটনের মাঝেও পড়াশোনা এবং খেলাধুলা চালিয়ে যান একাগ্রতা ও অদম্য ইচ্ছাশক্তি দিয়ে।

শুধু লেখাপড়াতেই নয়, খেলাধুলার প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছিল তার অসাধারণ প্রতিভার ছাপ। বিশেষ করে ফুটবলে নেতৃত্বগুণ ও ক্রীড়াদক্ষতায় জেলার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে উঠে আসেন তিনি। তার নেতৃত্বেই গড়ে ওঠে মেহেরপুর জেলা নারী ফুটবল দল, যেখানে তিনিই ছিলেন অধিনায়ক।

সুস্মিতার নানা আব্দুস সালাম বলেন, ‘প্রায় এক মাস আগে ভুল করে ঘুমের ওষুধ খেয়েছিল সুস্মিতা। তারপর থেকে আশা করতাম ও ভালো হয়ে ফিরবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ফিরল না।’

তার অকালমৃত্যুতে হরিরামপুর গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্কুলের শিক্ষক-সহপাঠী ও ক্রীড়ামোদীদের চোখে জল। এক প্রতিভাবান তারকার এভাবে হারিয়ে যাওয়া যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না কেউ।

এ ঘটনায় মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন জানান, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই মঙ্গলবার সকালে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।’