সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৫, ১০:২১ এএম

বিশ্ববাণিজ্যে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা

ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির ঘোষণায় অনিশ্চয়তা

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৫, ১০:২১ এএম

ছবি: ইন্টারনেট

ছবি: ইন্টারনেট

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার (১ এপ্রিল) হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে আয়োজিত ‘মেক আমেরিকান ওয়েলদি এগেন’ প্রেস কনফারেন্সে নতুন শুল্ক নীতি ঘোষণা করবেন। ট্রাম্প বলেন, এই নতুন শুল্ক তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে এবং তিনি ২ এপ্রিলকে মুক্তির দিন হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে এই শুল্কের পরিধি এবং প্রভাব নিয়ে এখনো অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে।  

শুল্ক নীতির মূল দিকগুলো

ট্রাম্প ইতোমধ্যে কানাডা, মেক্সিকো, চীন এবং ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেছেন। ৩ এপ্রিল থেকে গাড়ি আমদানির ওপরও ২৫ ভাগ শুল্ক বসানো হবে, যা বর্তমান শুল্কের সঙ্গে যোগ হবে।  

তবে আসল চিত্র পরিষ্কার হবে আজ ট্রাম্পের প্রেস কনফারেন্সের পর, যেখানে তিনি বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করবেন।  

শুল্ক কতটা বড় হতে পারে?

ট্রাম্পের অর্থনৈতিক উপদেষ্টারা প্রত্যেক দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা তৈরি করেছেন, যেখানে মার্কিন আমদানির ওপর শুল্ক আরোপকারী দেশগুলোর ওপর একইভাবে শুল্ক বসানো হবে।  

মূল বিষয়সমূহ:
- ২০ ভাগ বিশ্বব্যাপী শুল্ক: ট্রাম্পের উপদেষ্টারা ২০ ভাগ সর্বজনীন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন, যদিও হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, শুল্ক হতে পারে দেশভিত্তিক।
- শুল্ক নীতি সহানুভূতিশীল হবে: ট্রাম্প বলেছেন, আমেরিকা খুব বেশি শুল্ক আরোপ করবে না, বরং অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় সহানুভূতিশীল হবে।

যেসব দেশ ক্ষতির মুখে পড়তে পারে

বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই শুল্ক নীতি একটি নতুন বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের সূচনা করতে পারে। মার্কিন প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলো (ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, চীন) ইতোমধ্যে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।  

মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদের বিশেষ নজরে থাকা দেশগুলোর তালিকা:
আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনাম।

কানাডা-মেক্সিকোর প্রতিক্রিয়া:
- ট্রাম্প ইতোমধ্যে মেক্সিকো ও কানাডার আমদানির ওপর ২৫ ভাগ শুল্ক বসিয়েছেন (৪ মার্চ থেকে কার্যকর)।  
- কানাডা এর পাল্টা জবাবে ৩০ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলারের মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ ভাগ শুল্ক বসিয়েছে।  
- মেক্সিকোও পাল্টা শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা করছে।  

চীনের অবস্থান:
- ৪ ফেব্রুয়ারি: যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর ১০ ভাগ শুল্ক বসায়।  
- ৪ মার্চ: আরও ১০ ভাগ শুল্ক যোগ করা হয়।  
- ১০ মার্চ: চীন মার্কিন পণ্যের ওপর ১০-১৫ ভাগ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে এবং জানায়, তারা প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেবে।  

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের প্রতিক্রিয়া:
- ইউরোপীয় কমিশন ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক নীতিকে ভুল দিকের পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছে।  
- যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর র‍্যাচেল রিভস বলছেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য চুক্তি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।  

শুল্কের অর্থনৈতিক প্রভাব

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট মঙ্গলবার বলেছেন, নতুন শুল্ক নীতি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। তিনি আরও বলেন, "প্রেসিডেন্টের অসাধারণ উপদেষ্টাদের দল দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয় নিয়ে গবেষণা করছে, এবং আমাদের লক্ষ্য আমেরিকার সোনালি যুগ ফিরিয়ে আনা।"

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই শুল্ক নীতি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করতে পারে এবং সম্ভাব্য মন্দার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। 

বিশেষজ্ঞদের মতামত:

- কেলি অ্যান শ’ (সাবেক হোয়াইট হাউস বাণিজ্য উপদেষ্টা) বলেন, "২ এপ্রিল কেবল শুরু, এখানেই শেষ নয়। আমরা এখন এক নতুন বৈশ্বিক বাণিজ্য নীতির দিকে যাচ্ছি, যা দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তা তৈরি করবে।"
- ম্যাথিউ লুজেটি (ডয়েচে ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ) বলেন, "নতুন শুল্ক নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি কয়েক ত্রৈমাসিকে প্রায় ১ ভাগ হ্রাস পেতে পারে।"
- নিল ব্র্যাডলি (মার্কিন চেম্বার অব কমার্সের প্রধান নীতি কর্মকর্তা) বলেছেন, "নতুন শুল্ক নীতি আমেরিকান ব্যবসাগুলোর জন্য নেতিবাচক হবে।"

বিশ্ববাজারে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া 

মার্কিন কোম্পানিগুলো: উৎপাদন খরচ বাড়বে, যা মূল্যস্ফীতির চাপ সৃষ্টি করতে পারে। 
শেয়ারবাজার: বিনিয়োগকারীরা অনিশ্চয়তার কারণে বাজারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। 
মুদ্রাবাজার: ডলারের মান বাড়তে বা কমতে পারে নির্ভর করে দেশগুলোর প্রতিক্রিয়ার ওপর।  
তেল ও গ্যাস খাত: ট্রাম্প চাচ্ছেন ইউরোপীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি তেল ও গ্যাস কিনুক।

ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও বৈশ্বিক অর্থনীতি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে যাচ্ছে। বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলো কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।  

আরবি/এসএস

Link copied!