ইরানের রেল পরিবহন খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। তেহরান-আফ্রিন রেল শুষ্ক বন্দরের উন্নয়নে প্রাথমিকভাবে ৫০ ট্রিলিয়ন ইরানি রিয়াল (আইআরএল) বিনিয়োগ পাচ্ছে বলে ঘোষণা করেছেন ইরান রেলওয়ের বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক বিষয়ক উপ-প্রধান নূরুল্লাহ বেইরানভান্দ।
রোববার (২৫ মে) বন্দরের চূড়ান্ত উন্নয়ন পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এই শুষ্ক বন্দর ইরানের রেল সরবরাহ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে একটি বড় মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।’
বেইরানভান্দ জানান, বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণে নতুন লোকোমোটিভ কেনার জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হচ্ছে। তবে সীমিত অ্যাক্সেস ফি-এর কারণে কিছু অবকাঠামো উন্নয়নে জটিলতা তৈরি হয়েছে। তা সত্ত্বেও, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে প্রধান শিল্প ও খনি খাতের সংস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘তেহরান-আফ্রিন এখন ইরানের অন্যতম সক্রিয় লজিস্টিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। বিনিয়োগ প্রক্রিয়া ও জমি বরাদ্দ সহজতর করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি, বেসরকারি অপারেটরদের সহায়তায় নিবেদিত মালবাহী ট্রেন চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে।’
রেলভিত্তিক ট্রানজিট সম্প্রসারণকে কৌশলগত অগ্রাধিকার দিয়ে বেইরানভান্দ বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারী ও আন্তর্জাতিক পরিবহন করিডোর অপারেটরদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রতিবেশী দেশসহ একাধিক আন্তর্জাতিক অপারেটর এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে।
বর্তমানে প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন টোমান বিনিয়োগ চলমান এবং শীঘ্রই আরও নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে জানান তিনি। এসব চুক্তির বিস্তারিত তথ্য পরে প্রকাশ করা হবে।
এদিকে, এই দিনেই চীন থেকে সৌর প্যানেল বহনকারী একটি ট্রেন ইনচেহ বোরুন সীমান্ত দিয়ে ইরানে প্রবেশ করে। এই ট্রেনটি চীনের ইউ শহর থেকে ১৫ দিনের যাত্রা শেষে আফ্রিন কাস্টমস অফিসে পৌঁছায়।
ইরান রেলওয়ের উপ-প্রধান মীর-হাসান মুসাভি দিজাজি বলেন, ‘আফ্রিন কাস্টমস অফিসের কার্যক্রম শুরু হওয়া ইরানের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।’
তিনি আরও জানান, একই দিনে চীন থেকে আরও দুটি ট্রেন সৌর প্যানেল নিয়ে ইরানে এসেছে। চীনা অংশীদারদের সঙ্গে চলমান আলোচনার ভিত্তিতে শীঘ্রই দৈনিক রেল চালান চালুর আশা করা হচ্ছে।
মুসাভি জোর দিয়ে বলেন, ‘চীনের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী, সকল সৌর প্যানেল আমদানি এখন থেকে রেলের মাধ্যমেই হবে। এটি ইরানের জ্বালানি ভারসাম্য রক্ষা এবং নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’
এই প্রকল্প শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নের নয়, বরং ইরানের ভবিষ্যত টেকসই শক্তি নীতির জন্যও একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :