পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যে ‘বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ’ বন্ধে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন।
শনিবার (২৬ জুলাই) পূর্ব মেদিনীপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘১৫ আগস্টের পর থেকে আমরা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির স্বপ্ন অনুযায়ী একটি বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশমুক্ত ‘হিন্দু হোমল্যান্ড’ গড়ার লক্ষ্যে রাজপথে নামব।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজ্যে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি মুসলিম ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী রয়েছে, যারা ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ভোটার তালিকায় ঢুকে পড়েছে। এদের নির্মূল করতে হবে।’
বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ‘ডোমিসাইল সার্টিফিকেট’ এবং ভুয়া আধার-ভোটার কার্ড দিচ্ছে।
এই বক্তব্য এমন সময়ে এসেছে, যখন তৃণমূল কংগ্রেস অন্য রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকদের ওপর ‘বিতর্কিত হামলা’ ইস্যু তুলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে। পাল্টা হিসেবে বিজেপি রাজ্যে জনসংখ্যা পরিবর্তন ও অনুপ্রবেশ নিয়ে আগ্রাসী রাজনৈতিক সুর তুলেছে।
শুভেন্দু বলেন, ‘উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা, বীরভূম, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং কোচবিহার এই আটটি সীমান্তবর্তী জেলায় বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় ঢোকানোর চেষ্টা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৭৫,০০০ জনকে ফর্ম-৬ পূরণের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে।’
বিজেপির এই নেতা আরও বলেন, ‘২৬ জুলাইয়ের পর যেকোনো ডোমিসাইল সার্টিফিকেট যদি জেলা প্রশাসন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য গ্রহণ করে, তাহলে এর জন্য কঠোর পরিণতি বরণ করতে হবে। আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করব, যেন এই তারিখের পর ইস্যু করা কোনো বাসিন্দা সনদ গ্রহণ না করা হয়।’
তিনি দাবি করেন, ‘বিহারে যদি ৫০ লাখ ভুয়া ভোটার বাদ দিতে পারে, তবে পশ্চিমবঙ্গে ১ কোটি ২৫ লাখ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে বাদ দেওয়া জরুরি।’
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগগুলোকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ ও ‘সাংবিধানিক ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে’ আখ্যা দিয়েছে।
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বিজেপি বিভাজনের রাজনীতি করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ কখনো ঘৃণার রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেয়নি।’
উল্লেক, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ভারত ভাগের সময় পূর্ব বাংলার হিন্দুদের জন্য পৃথক আবাসভূমির ধারণা দিয়েছিলেন। বিজেপি নেতারা সেই ইতিহাসকেই আধুনিক রাজনীতিতে টেনে এনে নতুন করে ‘বাংলা হিন্দু হোমল্যান্ড’-এর মতবাদ তুলে ধরছেন।
আপনার মতামত লিখুন :