কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে.সি. ভেনুগোপাল রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছেন, কেরালার এক টেলিভিশন বিতর্কে বিজেপির মুখপাত্র ও সাবেক এবিভিপি নেতা প্রিন্টু মহাদেব প্রকাশ্যে বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। তিনি সতর্ক করেছেন, এ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে তা সরকারের সহযোগিতা ও সহিংসতাকে ‘স্বাভাবিক করা’ হিসেবে গণ্য হবে। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
ভেনুগোপাল জানান, মহাদেব লাইভ বিতর্কে ঘোষণা করেছেন—‘রাহুল গান্ধীকে বুকে গুলি করা হবে।’ কংগ্রেস নেতার ভাষায়, ‘এটি কোনো ভুল উচ্চারণ বা বাড়াবাড়ি নয়, বরং ঠান্ডা মাথায় দেওয়া ভয়ংকর হত্যার হুমকি।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘শাসকদল বিজেপির একজন মুখপাত্রের মুখ থেকে এ ধরনের বিষাক্ত মন্তব্য শুধু রাহুল গান্ধীর জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে না, এটি সংবিধান, আইনের শাসন ও নাগরিকদের নিরাপত্তার প্রতি আঘাত।’
কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক আরও জানান, রাহুল গান্ধীর নিরাপত্তা নিয়ে সিআরপিএফ একাধিকবার সতর্ক চিঠি দিয়েছে, যার একটি চিঠি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে পাঠানো হলেও তা রহস্যজনকভাবে গণমাধ্যমে ফাঁস হয়।
ভেনুগোপাল বলেন, ‘এই প্রেক্ষাপটে বিজেপির মুখপাত্র নির্ভয়ে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়েছেন, যা একটি বৃহত্তর ও ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে হচ্ছে।’
তিনি দাবি করেন, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিজেপি-সমর্থিত গোষ্ঠী থেকেও বারবার রাহুল গান্ধীকে হত্যার হুমকি ও তার বিরুদ্ধে সহিংসতার ডাক দেওয়া হচ্ছে।
চিঠিতে ভেনুগোপাল লেখেন, ‘রাহুল গান্ধী ভারতের বহুত্ববাদী চেতনার প্রতীক। তিনি এমন এক পরিবারের উত্তরাধিকার বহন করছেন, যারা দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন—১৯৮৪ সালে জাতীয় ঐক্যের জন্য সংগ্রামে ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করা হয়, ১৯৯১ সালে শান্তি ও আধুনিকায়নের পথে রওনা হওয়ার সময় রাজীব গান্ধীকে হত্যা করা হয়। তাই রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি কেবল একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, ভারতের গণতান্ত্রিক চেতনায় আঘাত।’
ভেনুগোপাল হুঁশিয়ারি দেন, ‘এ হুমকিকে যদি সরকার দ্রুত, দৃশ্যমান ও কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে দমন না করে, তবে তা আপনার সহমতের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হবে এবং এটি গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।’
কংগ্রেসের মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান পবন খেরা বলেন, ‘এটি রাহুল গান্ধীর জীবনের ওপর একক কোনো হুমকি নয়। রাহুল গান্ধীর নিরাপত্তা পাঠানো চিঠি এবং তা ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁস করে দেওয়া—সবকিছুই ষড়যন্ত্রের গন্ধ বহন করছে।’
এদিকে, কেরালা বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা ভি.ডি. সাথীসান শনিবারই রাজ্য সরকার ও পুলিশকে সমালোচনা করে বলেন, ‘এ ধরনের গুরুতর হুমকি দেওয়ার পরও অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়া দুঃখজনক।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন