আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সাল ইসরায়েলের জন্য ঐতিহাসিক। ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করবে। ইরানি অক্ষ (মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী) ধ্বংস করার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করবে। আমাদের তা করার ‘ক্ষমতা’ আছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের রোশ হাশানা উৎসবের আগে দেশটির সামরিক নেতাদের সঙ্গে এক টোস্টে (পানীয় পানের প্রথা) এ ঘোষণা দেন তিনি। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল ও ওয়াইনেট গ্লোবাল এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোশ হাশানা উৎসবের আগে নেতানিয়াহুর বক্তব্যের সময় প্রতিরক্ষমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামিরসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন ।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা এমন একটি সংগ্রামের মধ্যে আছি যেখানে আমরা আমাদের শত্রুদের ওপর জয়লাভ করছি। আমাদের অবশ্যই ইরানি অক্ষকে ধ্বংস করতে হবে এবং আমাদের তা করার শক্তি আছে। আসন্ন বছরে অর্থাৎ ২০২৬ সালে আমাদের সামনে এটিই অপেক্ষা করছে, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য একটি ঐতিহাসিক বছর হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে ইসরায়েল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কেবল গাজায় সীমাবদ্ধ নয়, অন্যান্য ফ্রন্টেও নিরাপত্তা, বিজয় ও শান্তির জন্য সুযোগ তৈরি করাই লক্ষ্য।
দখলদার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করেন যে, তাদের উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে হামাসকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা, জিম্মিদের মুক্ত করা এবং নিশ্চিত করা যে গাজা ও ইসরায়েল ভবিষ্যতে কোনো হুমকিতে থাকবে না। তিনি দুইটি মৌলিক গুণাবলী ‘সংকট মুহূর্তে ঐক্য ও অটল সংকল্পের’ ওপর জোর দিয়ে উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ‘শানা তোভা’ বা ‘সেরা বছর’ বলে শুভেচ্ছা জানান।
আইডিএফ ও সামরিক সূত্রগুলোর তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ের অভিযানে সেনাবাহিনী হামাসের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য আঘাত হেনেছে। এবং সামরিক নেতৃত্বও এই মুহূর্তকে যুদ্ধের ‘গুরুত্বপূর্ণ ধাপ’ হিসেবে দেখছে; একই সঙ্গে সামরিক ও রাজনৈতিক স্তরে কৌশলগত লক্ষ্য ও ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। আইডিএফ চিফ অব স্টাফ ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সময়োপযোগী তথ্য ও বিশ্লেষণ রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে শেয়ার করছেন।
নেতানিয়াহুর এই টোস্ট ও প্রতিশ্রুতি এমন এক সময়ে এলো যখন ইসরায়েলের পক্ষ থেকে যুদ্ধকে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কার্যক্রম তীব্র হয়েছে এবং সরকারও তা রাজনৈতিকভাবে সমর্থন দিতে আগ্রহী। কিন্তু একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মনোযোগ ও নীতিগত প্রশ্নোত্তরও তীব্র রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামরিক বিজয় এবং সশস্ত্র সংঘাতে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক, মানবিক ও কূটনৈতিক জটিলতা অব্যাহত থাকবে।