ঢাকা রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫

কি স্বার্থে ইরানে হামলা চালাল ট্রাম্প?

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৫, ০২:৩৯ পিএম
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী যখন ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জোরালো হচ্ছে, ঠিক সেই সময় তেহরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যা রীতিমতো মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনাকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। কিন্তু ইরানে হামলা চালানোর পেছনে কি স্বার্থ রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালানোর সিদ্ধান্তে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা শুধু নিরাপত্তাবিষয়ক সিদ্ধান্ত নয়। এটি ছিল রাজনৈতিক কৌশল আর কৌশলগত স্বার্থের একটা জটিল সমন্বয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্বার্থ 

নির্বাচনী কৌশল: ট্রাম্প ২০১৬ ও ২০২০ সালের নির্বাচনে বারবার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এবং ‘শত্রু রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান’ দেখানোর চেষ্টা করেছেন। ইরানকে আক্রমণ করলে বা সামরিক হুমকি দিলে তিনি নিজের কঠোর জাতীয়তাবাদী অবস্থান তুলে ধরতে পারেন। যা রিপাবলিকান ভোটারদের অনেকাংশের কাছে জনপ্রিয়।

সংকট থেকে মনোযোগ সরানো: যখনই ট্রাম্প প্রশাসন অভ্যন্তরীণ চাপ বা বিতর্কের মুখে পড়েছে (যেমন: অভিশংসন প্রক্রিয়া), বিদেশে উত্তেজনা তৈরি করে জাতীয় সংহতির আবহ তৈরি করার চেষ্টা করেছেন।

ভূরাজনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থে ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক

ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর খুব ঘনিষ্ঠ ছিল। ইরান হচ্ছে ইসরায়েলের প্রধান শত্রু। ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করা ও হুমকি দেওয়া ইসরায়েলের নিরাপত্তার পক্ষে যায় এবং ইসরায়েলপন্থি লবিগুলোর (যেমন এআইপিএসি) সমর্থন জোগাড় করতে সাহায্য করে।

সৌদি আরবের স্বার্থ

ট্রাম্পের প্রশাসন সৌদি আরবের সঙ্গে বিশাল অস্ত্র চুক্তি করেছে। ইরান-সৌদি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইরানকে দুর্বল করে সৌদি আরবের আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের পথ সুগম করা ট্রাম্পের অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত এজেন্ডার অংশ।

অর্থনৈতিক স্বার্থ

অস্ত্র শিল্পকে চাঙ্গা রাখা: মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়লে অস্ত্র বিক্রি বাড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় প্রতিরক্ষা শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে ট্রাম্পের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। যুদ্ধের আবহ বজায় রাখা তাদের জন্য লাভজনক।

তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ: মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা তৈরির মাধ্যমে বিশ্ববাজারে তেলের দামের ওঠানামা ঘটিয়ে ট্রাম্প মার্কিন শেল অয়েল উৎপাদকদের কিছু সুবিধা দিতে চেয়েছে বলেও বিশ্লেষকরা মনে করেন।

ব্যক্তিগত মানসিকতা

ট্রাম্প প্রায়ই শক্তি প্রদর্শন, প্রতিদ্বন্দ্বীকে দমন করার নীতি পছন্দ করতেন। ‘ডিল মেকার’ ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্য কখনো কখনো হঠাৎ আক্রমণাত্মক বা অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ নেন।