যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গরুর মাংস, টমেটো, কলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কয়েক ডজন খাদ্যপণ্যের ওপর আরোপিত আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করেছেন। ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই নতুন এ শুল্কছাড় কার্যকর হয়েছে। এটিকে ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, দীর্ঘ সময় ধরে তিনি দাবি করে আসছিলেন যে চলতি বছরের শুরু থেকে তিনি যে ব্যাপক আমদানি শুল্ক আরোপ করে আসছিলেন, তা মূল্যস্ফীতি বাড়াচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন কাঠামোগত বাণিজ্যচুক্তিরও ঘোষণা দেয়। এটি চূড়ান্ত হলে আর্জেন্টিনা, ইকুয়েডর, গুয়াতেমালা ও এল সালভাদর থেকে আমদানি হওয়া কিছু খাদ্যপণ্য এবং অন্যান্য সামগ্রীর ওপর শুল্ক প্রত্যাহার হবে। মার্কিন কর্মকর্তারা বছর হওয়ার শেষের আগেই এ ধরনের আরও কিছু চুক্তি করার কথা ভাবছেন।
শুক্রবার শুল্ক প্রত্যাহার করে যেসব পণ্যের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেসবের মধ্যে এমন সব পণ্য রয়েছে, যা মার্কিন ভোক্তারা প্রতিদিন কেনেন। এসব পণ্যের বেশির ভাগের দাম গত এক বছরে ব্যাপক হারে বেড়েছে।

কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্সের সেপ্টেম্বরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে গরুর কিমা মাংসের দাম প্রায় ১৩ শতাংশ বেড়েছে। আর স্টেকের দাম বেড়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ। এ মূল্যবৃদ্ধি গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ ছাড়া কলার দাম ৭ শতাংশ ও টমেটোর দাম ১ শতাংশ বেড়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে বাড়িতে খাওয়ার উপযোগী ভোগ্যপণ্যের সামগ্রিক খরচ বেড়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যের ওপর সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে বিশ্ববাণিজ্যব্যবস্থাকে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিয়েছেন ট্রাম্প। অঙ্গরাজ্যভেদে অতিরিক্ত শুল্কও নির্ধারণ করেছেন তিনি।
ট্রাম্প সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টিতে মনোযোগ দিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে তাঁর শুল্কনীতি নয়; বরং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতিমালা দায়ী।
এদিকে ভোগ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে হতাশা ক্রমে বাড়ছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, মূল্যবৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে আমদানি শুল্ক। আগামী বছর ভোগ্যপণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে। কারণ, প্রতিষ্ঠানগুলো পুরো শুল্কের বোঝা ভোক্তাদের ওপর চাপাতে শুরু করবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন