বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সেলিম আহমেদ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ১২:৪৭ এএম

কামরুজ্জামান লন্ডনে থেকেও পরীক্ষা দেন সুনামগঞ্জে!

সেলিম আহমেদ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ১২:৪৭ এএম

কামরুজ্জামান লন্ডনে থেকেও পরীক্ষা দেন সুনামগঞ্জে!

লন্ডনে অবস্থান করেও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএ পরীক্ষায় সুনামগঞ্জের একটি কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন মো. কামরুজ্জামান। বিষয়টি অবাক করার মতো হলেও ঘটনা ভিন্ন। কামরুজ্জামান লন্ডনে থাকলেও তার পক্ষে ‘প্রক্সি’ হিসেবে পরীক্ষা দিচ্ছেন তারই নিকটাত্মীয় মো. মিজানুর রহমান মিজান। অন্য শিক্ষার্থীরা যাতে বিষয়টি টের না পান, সে জন্য মিজান পরীক্ষা দেন পরীক্ষাকেন্দ্রের অধ্যক্ষের রুমে বসে। নজিরবিহীন এ ঘটনা চাউর হাওয়ার পর সুনামঞ্জে চলছে তোলপাড়।ওই কেন্দ্রের এক শিক্ষার্থী শিক্ষা উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, সিলেট বিভাগীয় কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় মনে হচ্ছে, শুধু নামে নয়, কাজেও উন্মুক্তভাবেই চলছে উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়।

অভিযোগ ও কামরুজ্জামানের পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড যাচাই করে দেখা যায়, কামরুজ্জামান বিএ-২২ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি বর্তমানে তৃতীয় ও চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা দিচ্ছেন। তার শিক্ষার্থী আইডি নম্বর-২২০২৩৬৩৪০৫০। বতর্মানে তিনি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। এর আগে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকও ছিলেন তিনি।

সূত্র জানায়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে বিএ এবং বিএসএস তৃতীয় ও চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা চলছে। এর মধ্যে গত ২০ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছিল ইতিহাস-২ পরীক্ষা। এ সময় কামরুজ্জামান ছিলেন লন্ডনে। তথ্যমতে, গত ২৪ অক্টোবর বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তিনি লন্ডন থেকে সিলেট ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। ওই সময় তাকে বিমানবন্দরে গণসংবর্ধনাও দেওয়া হয়। এভাবে গত ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান-২ পরীক্ষায়ও প্রক্সি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন মিজান।

লন্ডনে থেকে কামরুল কীভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেনÑ এ তথ্য খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, কামরুলজ্জামান লন্ডনে থাকায় প্রথম সেমিস্টার থেকেই তার পরিবর্তে প্রক্সি হিসেবে পরীক্ষা দিচ্ছেন তার ভাতিজিজামাই মো. মিজানুর রহমান মিজান। আর এই প্রক্সি পরীক্ষার সুযোগ করে দিয়েছেন বাদাঘাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বাদাঘাট ইউনিয়ন সভাপতি মো. জুনাব আলী। মিজান যে প্রক্সি পরীক্ষা দিচ্ছেন, তা যাতে অন্য শিক্ষার্থীদের নজরে না আসে, সে জন্য পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরে কেন্দ্রে প্রবেশ করে অধ্যক্ষের রুমে বসেই পরীক্ষা দিতেন। আবার পরীক্ষা শেষ হওয়ার অনেক পরে তিনি কেন্দ্র থেকে বের হতেন।

ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের জানামতে তিনি এইচএসসি পাস করেছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তিনি এলাকার পরিচিত লোক, পরীক্ষাকেন্দ্রে এলে সবাই জানত। আমরাও চিনতাম। তাকে এক দিনও পরীক্ষাকেন্দ্রে দেখিনি আমরা।’

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি কামরুজ্জামানকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। তাকে পরীক্ষা দিতে কখনো দেখিনি। তাই যে অভিযোগ উঠেছে, তা যাচাই করলে সত্যতা বের হয়ে আসবে।’

এ প্রসঙ্গে বাদাঘাট সরকারি কলেজের কলেজের অধ্যক্ষ জুনাব আলী বলেন, ‘বিষয়টির সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।’

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জুনাব আলী বর্তমানে রাজনীতি নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত থাকায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিপাকে পড়েন। নিজেকে রক্ষা করার জন্য কৌশলে বিএনপি নেতা কামরুজ্জামানের সঙ্গে আঁতাত করেন। কামরুজ্জামানকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে মো. কামরুজ্জামান প্রথমে উন্মুক্ততে পড়াশোনা করেন না বলে রূপালী বাংলাদেশকে জানান। পরে তার রেজিস্ট্রেশন ও অ্যাডমিট কার্ড এই প্রতিবেদকের হাতে আছে জানালে তিনি বলেন, ‘আমি এবার পরীক্ষা দিচ্ছি না। বিষয়টি নিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেটের আঞ্চলিক পরিচালক মো. মোকছেদার রহমান বলেন, ‘এ-সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আমাদের প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। তবে অভিযোগ আসার পর আমি পরীক্ষাকেন্দ্রে নিরাপত্তা বাড়িয়েছি।’

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!