হাড় ভাঙা একটি সাধারণ সমস্যা, যা দুর্ঘটনা, আঘাত বা অস্টিওপোরোসিসের কারণে হতে পারে। হাড় ভাঙার পর সঠিক চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি হাড়ের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনে এবং জটিলতা প্রতিরোধ করে। এই আর্টিকেলে হাড় ভাঙার পর পুনর্বাসনের ধাপ এবং সঠিক যতœ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
হাড় ভাঙার পর পুনর্বাসনের গুরুত্ব
পুনর্বাসনের মূল লক্ষ্য হলো:
- হাড়ের স্বাভাবিক গঠন এবং শক্তি ফিরিয়ে আনা।
- জোড়ার নড়াচড়া এবং পেশির শক্তি বাড়ানো।
- ব্যথা এবং ফোলা কমানো।
- দৈনন্দিন কাজকর্মে ফিরে যাওয়া।
- হাড় ভাঙার পর পুনর্বাসনের ধাপ
পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নির্ভর করে হাড় ভাঙার ধরন, অবস্থান এবং রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর। সাধারণত নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করা হয়:
১. প্রাথমিক পুনর্বাসন (১-২ সপ্তাহ)
- বিশ্রাম: আঘাতপ্রাপ্ত স্থানকে বিশ্রাম দেওয়া।
- স্পিøন্ট বা কাস্ট: হাড়কে স্থির রাখার জন্য স্পিøন্ট বা কাস্ট ব্যবহার করা।
- সার্জারি: প্রয়োজন হলে ঢ়ষধঃব, ংপৎবি অথবা হধরষ/ৎড়ফ দিয়ে হাড় জোরা লাগানো।
- ব্যথানাশক ওষুধ: ব্যথা কমাতে ব্যবহার করা।
২. মধ্যবর্তী পুনর্বাসন (২-৬ সপ্তাহ)
- ফিজিওথেরাপি: বিশেষ ব্যায়াম এবং থেরাপির মাধ্যমে হাড়ের নড়াচড়া এবং পেশির শক্তি বাড়ানো।
- হালকা ব্যায়াম: হালকা স্ট্রেচিং এবং এরোবিক এক্সারসাইজ করা।
- ওজন বহন: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আস্তে আস্তে ওজন বহন শুরু করা।
৩. পূর্ণ পুনর্বাসন (৬ সপ্তাহ-৩ মাস)
- শক্তি বাড়ানো: পেশি এবং হাড়ের শক্তি বাড়ানোর জন্য ব্যায়াম করা।
- স্বাভাবিক কার্যক্রম: ধীরে ধীরে দৈনন্দিন কাজকর্ম শুরু করা।
- খেলাধুলা: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেলাধুলা শুরু করা।
পুনর্বাসনে ফিজিওথেরাপির ভূমিকা
ফিজিওথেরাপি হাড় ভাঙার পর পুনর্বাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর মধ্যে রয়েছে:
- স্ট্রেচিং: জোড়ার নড়াচড়া বাড়ানো।
- শক্তি বাড়ানো: পেশির শক্তি বাড়ানোর জন্য ব্যায়াম।
- ব্যালেন্স এবং স্থিরতা: ভারসাম্য এবং স্থিরতা বাড়ানোর জন্য ব্যায়াম।
- হাড় ভাঙার পর সঠিক যতœ
- সুষম খাদ্য: ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান।
- ধূমপান ত্যাগ: ধূমপান হাড়ের সুস্থতা ব্যাহত করে।
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম: হাড়ের সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
- চিকিৎসকের পরামর্শ: নিয়মিত চেক-আপ এবং পরামর্শ নিন।
উপসংহার
হাড় ভাঙার পর পুনর্বাসন একটি ধীর এবং নিয়মিত প্রক্রিয়া, যা হাড়ের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনে। ফিজিওথেরাপি, ব্যায়াম এবং সঠিক যতেœর মাধ্যমে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠা সম্ভব। সঠিক সময়ে চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন নিলে জটিলতা এড়ানো যায় এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়া যায়।
ডা. মো. নাইমুল আলম
এমবিবিএস, এমএস (অর্থোপেডিক্স)
এটেন্ডিং কনসালটেন্ট
ডিপার্টমেন্ট:
অর্থোপেডিকস এবং জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি
এভারকেয়ার হসপিটাল
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন