ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

লাল শাপলার রাজ্যে স্বাগত

আহাদ তালুকদার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল)
প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৫, ০৭:৫৯ এএম

বরিশালের উজিরপুর ও আগৈলঝাড়া উপজেলার লাল শাপলা বিল এখন পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। সবুজের মাঝে লাল শাপলার সমারোহ যেন প্রকৃতিকে রঙ-তুলির আঁচড়ে সাজিয়েছে। বিলের পানিতে ভেসে থাকা শাপলার সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির আনাগোনাÑ সব মিলিয়ে এক অনন্য দৃশ্য সৃষ্টি করেছে। 

প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে নৌকায় বসে বিলের মাঝখানে গেলে ভ্রমণকারীরা যেন স্বর্গরাজ্যে হারিয়ে যান। বর্তমানে বিলের পানি নিস্তরঙ্গ এবং ফড়িংসহ নানা পাখি শাপলার ওপর খেলছে। পর্যটকরা জানান, পাখিগুলো যাতে শান্তিতে থাকে, সে বিষয়ে সবার সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা আর আগৈলঝাড়ার বাগধা বিলে দেখা পাওয়া যায় লাল শাপলার নয়নাভিরাম দৃশ্য। এখানে সাধারণত তিন ধরনের শাপলা জন্মেÑ লাল, সাদা আর বেগুনি। তবে বিলের মূল আকর্ষণ লাল শাপলা। সাতলা গ্রামসহ দক্ষিণ-পশ্চিম বারপাইকা, আস্কর, নাঘিরপাড়, চাদত্রিশিরা, কুড়লিয়া, রামশীল, শুয়াগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার জলাশয়ে লাল শাপলার দেখা মিলবে। ইঞ্জিনচালিত ট্রলার বা নৌকায় ঘুরে দেখা যাবে এসব বিল।

এত বেশি জায়গাজুড়ে দেশের আর কোথাও লাল শাপলা দেখা যায় না। খুব সকালে গেলে লাল শাপলা ফোটা অবস্থায় দেখা যায়। কলি থেকে সকালে ফুল ফুটে পূর্ণ রূপ ধারণ করে। শিশিরভেজা ভোরে এর মৃদু সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ে বিলে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ফুল নেতিয়ে পড়ে। উত্তর সাতলা নামের গ্রামে প্রায় ১০ হাজার একর জলাভূমিতে শাপলা জন্মে। গ্রামটির প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ এর চাষের সঙ্গে জড়িত।

যেভাবে যাবেন সাতলা:

ঢাকা থেকে বরিশালে যাওয়া যায় লঞ্চ কিংবা বাসে। তবে রোমান্সের জন্য রাতে লঞ্চে যাওয়াই ভালো। দিনের কাজ শেষে ব্যাগ নিয়ে সদরঘাট চলে গেলেই হলো। রাত ৯টা পর্যন্ত লঞ্চ পাওয়া যায়। বরিশাল সদর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়ন। বরিশাল শহর থেকে উজিরপুর সাতলা বিলে যাওয়া যায় মোটরসাইকেলে। সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। আবার বরিশাল থেকে সরাসরি উজিরপুরের সাতলা বাজার পর্যন্ত বাস চলে। এ ছাড়া চাইলে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাওয়া যায়। বিলে বেড়ানোর জন্য নৌকা ভাড়া করতে হবে দরদাম করে। বিলের চারপাশে স্থানীয়দের বাড়িঘর আছে। একটু খোঁজাখুঁজি করলে কম ভাড়ায় নৌকা পাওয়া যায়।